৭ বছর পর আইপিএলের ফাইনালে কলকাতা

অনলাইন ডেস্ক :

 

চলতি আইপিএলে শক্তিশালী দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল কেকেআর। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ চেন্নাই সুপার কিংস। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর দিল্লির দেওয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা এক বল বাকি থাকতে তুলে নেয় কলকাতা। কিন্তু কলকাতার জয় সহজে আসেনি। কারণ শেষ তিন ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে শাহরুখ খানের দলের হাত থেকে ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অশ্বিনরা। শেষে এক বল বাকি থাকতে ছয় মেরে দলকে ম্যাচ জেতান রাহুল ত্রিপাঠি।

 

প্রত্যাবর্তন বললেও কম বলা হয়। এ যেন অকল্পনীয় প্রত্যাবর্তন। আইপিএলের আরব আমিরাত পর্ব শুরুর আগে কেউ ভাবেওনি যে, প্রথম পর্বের সাত ম্যাচে মাত্র দুইটিতে জেতা কেকেআর আইপিএল প্লে অফে উঠবে। আর শুধু উঠবে না এলিমিনেটরে বিরাট কোহলির আরসিবির সফর শেষ করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালসকেও হারিয়ে দেবে।

এখানে একটি অদ্ভুত বিষয় দেখা যায় যে, টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান কেকেআরের একাদশে ফেরার পর থেকেই যে কলকাতার জয়রথ ছুটছেই। ছুটতে ছুটতে এবার তারা চলে গেছে ফাইনালে। মজার ব্যাপার হলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা সবশেষ ফাইনাল খেলেছিল ২০১৪ সালে। ওই দলে ছিলেন সাকিব, আছেন এবারের দলেও। মাঝে আর আইপিএলের ফাইনাল খেলা হয়নি কলকাতার।

 

এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইয়ন মর্গ্যান। আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন কেকেআর বোলাররা। আর তাই সাকিব আল হাসান, বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারিন, লকি ফার্গুসনদের উপর এদিনও ভরসা রেখেছিলেন নাইট অধিনায়ক। আর অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন নাইট বোলাররাও। শুরুটা কিছুটা ভাল করলেও পৃথ্বী শ্বাহ (১৮) কে আউট করে দিল্লিকে প্রথম ধাক্কাটি দেন বরুণ চক্রবর্তী। এরপর ধাওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মার্কাস স্টোইনিস। কিন্তু দলের ৭১ রানের মাথায় তিনিও আউট হয়ে যান। এরপর দ্রুত ফেরেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান (৩৬) এবং অধিনায়ক ঋষভ পন্থও। অল্পরানেই আউট হয়ে গেলেও বরুণ চক্রবর্তী নো বল করায় বেঁচে যান হেটমেয়ার। তিনি এবং শ্রেয়াস আইয়ার (৩০*)- এর সৌজন্যেই শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান তোলে দিল্লি।

 

আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে বোলারদের পাশাপাশি দুরন্ত খেলেছেন দুই নাইট ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং শুভমন গিলও। এদিনও যার অন্যথা হল না। শারজার মাটিতে অল্প রানও যেখানে তোলা কঠিন, সেখানে আবারও দুরন্ত শুরু করেন নাইট ওপেনাররা। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তাকে যোগ্য সঙ্গত দেন গিলও। দুইজনে মিলে ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৯৬ রান। এরপর অবশ্য ব্যক্তিগত ৫৫ রানের (৪১) মাথায় আউট হয়ে যান ভেঙ্কটেশ। তবে ততক্ষণে চারটি চার এবং তিনটি ছয় মেরে ফেলেছেন তিনি। এরপরই অবশ্য চাপ বাড়ায় দিল্লির বোলাররা। পরবর্তীতে দ্রুত আউট হন নিতীশ রানা (১৩), শুভমন গিল (৪৬) এবং দীনেশ কার্তিক (০)। ফলে আরও চাপে পড়ে যায় কেকেআর ব্যাটিং লাইন আপ। এমনকি, ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান ইয়ন মর্গ্যানও।

 

আর এখান থেকেই ম্যাচে হঠাৎ করেই পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। অশ্বিনের শেষ ওভারের প্রথম বলে এক রান নেন রাহুল ত্রিপাঠি। কিন্তু পরের বলে সাকিব আল হাসান কোনও রান করতে পারেননি। আর এরপরের বলে তিনি আউট হয়ে যান। তখনও কেকেআরের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ বলে ৬ রান। কিন্তু ছয় মারতে গিয়ে আউট হন গত ম্যাচের নায়ক সুনীল নারিনও। এই সময় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচ হেরে যেতে পারে কলকাতা। কিন্তু নাইটদের পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়ান রাহুল ত্রিপাঠি। ছয় মেরেই ম্যাচ জেতান দলকে। সেই সঙ্গে এনে দেন ফাইনালের টিকিটও।

 

দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৩৫/৫ (শিখর ধাওয়ান ৩৬, শ্রেয়স ৩০*, বরুণ ২/২৬)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৯.৫ ওভারে ১৩৬/৭ (ভেঙ্কটেশ ৫৫, গিল ৪৬, রাবাডা ২/২৩)
কলকাতা নাইট রাইডার্স তিন উইকেটে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *