নিয়ম মেনে মাংস খান সুস্থ থাকুন

অনলাইন ডেস্ক : লাল মাংস বা রেড মিট নামে পরিচিত গরু, ছাগল বা মহিষের মাংসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, খনিজ পদার্থ ও কোলস্টেরল থাকে। বাড়ন্ত বয়সের কিশোর-তরুণ ও প্রসূতি মায়েদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে লাল মাংস খাওয়া উচিত। তবে প্রচুর কোলস্টেরল থাকায় এ মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে বয়স্ক লোকজন এবং উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীদের।
কোরবানির ঈদে মাংস তো খাওয়া হবেই। তবে সেই খাওয়াটা যেন নিয়ম মেনে হয়। ঘরে মাংস থাকলে প্রতি বেলায় যে প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।

তা ছাড়া হঠাৎ করে বেশি পরিমাণে মাংস পাকস্থলীর পরিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাবে। যেকোনো বয়সের মানুষের হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির জটিলতা ও রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির জটিলতায় যাঁরা ভুগছেন, মাত্রা ছাড়া মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে তঁাদের সাবধান হতে হবে।


আমরা অনেকেই যে খাবার খাই তার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে সচেতন নই। গরু, ছাগল বা মহিষের মাংসের গুণাগুণ জানেন না অনেকে। জানা থাকলে সচেতন হওয়া যায়। অতিভোজনও এড়ানো যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ৭৪ দশমিক ৩ শতাংশ জলীয় অংশ, ১ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১১৪ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ২২ দশমিক ৬ গ্রাম আমিষ, ২ দশমিক ৬ গ্রাম চর্বি, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, শূন্য দশমিক ৮ মিলিগ্রাম লোহা, শূন্য দশমিক ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, শূন্য দশমিক শূন্য ৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন-বি-২ এবং ২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে।


মহিষের মাংসে ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ জলীয় অংশ, ১ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ৮৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১৯ দশমিক ৪ গ্রাম আমিষ, ১ দশমিক ৯ গ্রাম চর্বি এবং ৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে।
ছাগলের মাংসে আছে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ জলীয় অংশ, ১ দশমিক ১ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১১৮ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ২১ দশমিক ৪ গ্রাম আমিষ, ৩ দশমিক ৬ গ্রাম চর্বি এবং ১২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।


লক্ষ রাখতে হবে, মাংসে যেন কোনো সাদা চর্বি না থাকে। অর্থাৎ মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে তা সম্পূর্ণ কেটে ফেলে দিতে হবে। কারণ, ওই চর্বি আপনার রক্তের নালিতে গিয়ে জমে যাবে। রক্তের নালিতে চর্বি জমে গেলে রক্ত সঞ্চালনে বাধা পাবে। এতে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হতে পারে এবং হার্টঅ্যাটাকও হতে পারে।


অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদে বেশি মাংস খাওয়া হয় বলে অনেকেই মুটিয়ে যেতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে ব্যায়ামের অভ্যাস আজই শুরু করুন। নিয়মিত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন। রাস্তায় গিয়ে হাঁটলে খুব ভালো। মুক্ত হাওয়ায় মনটাই ভালো হয়ে যায়। রাস্তায় যেতে না পারলে বাড়ির উঠানে অথবা ছাদে অথবা বারান্দায় হাঁটুন। দেখবেন শরীর-মন দুটোই ঝরঝরে লাগছে।
লেখক, প্রধান পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *