সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে : আইজিপি

অনলাইন ডেস্ক :

 

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই মানুষের জীবন। সময় এক বহতা নদী। সময় চলে যায়, জীবন থেমে থাকে না। সংগঠনও জীবনের ন্যায়। এজন্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।

 

আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা পেয়েছি। বাঙালি পরাভব না মানা জাতি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দেশ ও দেশের জনগণ। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।’

 

বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ চাকরির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এ তিনটি জায়গায় কাজ করা খুব দরকার। তিনি তার কর্মকালীন সময়ে সকলের সহযোগিতায় কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগ বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

 

তিনি বলেন, কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দ্যা বেস্ট’ প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে, যার সুফল দেশের জনগণ খুব শিগগিরই পাবেন। তিনি এএসপি পদে নিয়োগ বিধিতেও সংস্কার আনার সময় এসেছে বলে উল্লেখ করেন।

 

দ্বিতীয় মেয়াদপূর্তিতে সহকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এ কথা বলেন।

 

বুধবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করলে কেন পার্টিজন হবে,, জানি না। আমরা যারা এই জেনারেশন, তারা অনেক সৌভাগ্যবান। এক জীবনে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। আমি গ্রামের বাড়িতে কুপি বাতি দেখেছি। গ্রামের মানুষ তখন এত দরিদ্র ছিল যে, কেরোসিন কেনার ক্ষমতা ছিল না। এই মুহূর্তে যার জন্ম, সে যদি জাদুঘরে যায় এবং সেখানে যদি কুপি বাতি থাকে এবং কেউ যদি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তাহলে জানবে এটা কুপি বাতি। সেই কথা বলতে গেলেই বঙ্গবন্ধুর কথা আসে এবং সেই কথা আসলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধায় ভেতর থেকেই মাথা নুইয়ে আসে। আগে গ্রামের পর গ্রামে কোনো শিক্ষা ছিল না। একজন এসএসসি পাস করলে দশ গ্রামের মানুষ দেখতে আসত।

 

বিএ, এমএ পাস করলে দেখতে আসত। আমি আশির দশকেও সিলভারের হাঁড়ি দেখি নাই। দেশটি এমন ছিল। সেই দেশটা কোথায় আসছে? যে মানুষটা দেশটাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, তাঁর প্রশংসা করা যাবে না? ১৮ কোটি মানুষকে যে সম্মান দিয়ে গেছে, তাঁর সম্পর্কে কথা বললে কি দলীয় হয়ে যাবে?’

 

আইজিপি বলেন, ‘যে জাতি তাদের হিরোদের মর্যাদা দেয় না, সে জাতি নতুন কোনো হিরো পায় না। যে জাতি যত বেশি হিরো পয়দা করে, তারা তত বেশি এগিয়ে থাকে। আমাদের বেশি বেশি হিরো পয়দা করতে হবে, এ জন্য আমাদের রিকগনাইজ করতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা বিস্মৃতি প্রবণ, সহজে ভুলে যাই, কোনো কিছু মনে রাখতে পারি না। আমরা দুরন্ত গতিতে সামনে চলে, এটা ভালো। সেই সঙ্গে স্মৃতিও দরকার। ভবিষ্যৎ নির্মিত হয় কীভাবে, অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমানের সঞ্চয় তৈরি করে ভবিষ্যৎ। মাঝে মাঝে অবশ্যই স্মৃতির তহবিলে কী আছে, সেটা দেখা দরকার।’

 

নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন-এই তিন জায়গায় অনেক কাজ করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ জন্য গত দুই বছরে এই জায়গায় অনেক কাজ করেছি। নেতা হিসেবে আমি মনে করি, সব ক্রেডিট পুলিশ সদস্যদের। আমরা ৫২০টি বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি। এই কাজ কি পুলিশ আগে কখনো করেছে? এটি বাস্তবায়ন করতে অনেক কাজ করতে হয়েছে। আমরা বাংলাদেশে লো কস্ট হাউজিংয়ের ধারণা প্রচলন করেছি, পরিবেশবাদী বাড়ির ধারণা প্রচলিত করেছি। আমরা শুধু বাড়িই বানিয়ে যাব না, নতুন ধারণারও প্রচলন করব।’

 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মহল ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। এটা নিয়ে কোনো সমালোচনা হোক, আমরা চাই না। এটা দেশের জন্য, মানুষের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে।’

 

অনুষ্ঠানের শুরুতে আইজিপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অতিরিক্ত আইজি ড. মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, র‍্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি মনিরুল ইসলাম, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজি কামরুল আহসান, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, সিআইডির কর্মকর্তাগণ এবং বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *