অনলাইন ডেস্ক :
করোনা মহামারির সংক্রমণ কমে আসায় বিশ্বের অনেক দেশই তাদের ভূখণ্ডে ভ্রমণের বিধিনিষেধ ও করোনার স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করেছে। চলতি বছরের গত ১৮ মার্চ ব্রিটিশ সরকার তাদের দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সকল বিধিমালা শিথিলের ঘোষণা দেয়। এরপর আরও ৬টি ইউরোপীয় দেশ একইপথ বেছে নিয়েছে।
ইউরোপের অনেক দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন করোনার নিয়মনীতি শিথিল হয়েছে। ভ্রমণকারী টিকা নিয়েছেন কি নেননি- তা নিয়ে এখন এ অঞ্চলের বেশিরভাগ গন্তব্যে কড়াকড়ি নেই। অনেকস্থানে পর্যটকদের আসার আগে বা পড়ে বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ টেস্ট করার নিয়মও উঠে গেছে। নেই পৌঁছানোর পর কোয়ারেন্টিন পালনের নিয়ম।
আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে রইলো কোন দেশগুলোয় করোনার টিকা না নিয়ে বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া ভ্রমণ করা যাচ্ছে-
আর্জেন্টিনা: দেশটিতে ভ্রমণ করতে হলে বিমা করাতে হবে এবং একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে হবে, গত ৭ এপ্রিল পর্যন্ত এছাড়া অন্য কোনো কড়াকড়ি শর্ত দেয়নি দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ।
আরুবা: ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জের এ গন্তব্যে যাওয়ার সকল কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ গত ১৯ মার্চ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
বাহরাইন: মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে কোনো প্রকার করোনা টেস্ট বা টিকা না নিয়েই ভ্রমণ করা যাচ্ছে।
বোনাইরে: গত ২০ এপ্রিল থেকে দ্বীপাঞ্চলটি মহামারির আগের সময়ের ভ্রমণ নীতিমালায় ফিরেছে। তবে করোনা নেগেটিভ ঘোষণা দিয়ে আসার নিয়মটি এখনও কার্যকর রয়েছে।
চিলি: সকল পর্যটক দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন ১৪ এপ্রিল থেকে। তবে এজন্য একটি বিমা করানো বাধ্যতামূলক এবং আসার পর করোনা টেস্ট করাতে হবে।
কোস্টারিকা: গত ১ এপ্রিল থেকে এমনকী টিকা না নেওয়াদের জন্যও চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরিক্ষা ও ভ্রমণ বিমার নিয়ম বাতিল করা হয়েছে।
কিউবা: দেশটিতে আসার পর পিসিআর টেস্ট করাবেন এমন একটি ফর্ম পূরণ করে যেকোনো ভ্রমণকারী সেখানে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন গত ৬ এপ্রিল থেকেই।
চেক রিপাবলিক: ৯ এপ্রিল থেকে নিজ সীমান্ত পুরোপুরি ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করেছে ইউরোপীয় দেশটি।
ডেনমার্ক (গ্রিনল্যান্ড ছাড়া): ২৯ মার্চ থেকে সকল করোনা বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে ডেনমার্ক। টিকা নেওয়া ও না নেওয়া উভয় ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটি কার্যকর করেছে।
এল সালভেদর: ২৪ ফেব্রুয়ারি করোনাজনিত সব বিধিনিষেধ ঊঠিয়ে নেওয়া হয়।
গ্যাবন: আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম দেশ হিসেবে গত ১৬ মার্চ থেকে সকল করোনা বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে।
গ্রানাডা: ক্যারিবিয় এই দ্বীপ দেশ একই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে ৪ এপ্রিল থেকে।
হাঙ্গেরি: ৭ মার্চ থেকে করনাভাইরাস জনিত ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়।
আইসল্যান্ড: ২৫ ফেব্রুয়ারি এমন সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।
আয়ারল্যান্ড: ৬ মার্চ থেকে দেশটিতে ভ্রমণ আর কোনো বিধিনিষেধ নেই।
জ্যামাইকা: গত ১৬ এপ্রিল বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা ও করোনা পরীক্ষার নিয়ম বাতিল করেছে।
জর্ডান: ১ মার্চ দেশটি জানায়, এখন থেকে ভ্রমণকারীদের করোনা পরীক্ষার কোনো সনদ দেখাতে হবে না।
লাটভিয়া: সংক্রমণের উচ্চ-ঝুঁকির তালিকায় বর্তমানে কোনো দেশকেই রাখেনি লাটভীয় সরকার, সকলের ক্ষেত্রেও করোনা টেস্টের নিয়ম তুলে দেওয়া হয়েছে।
মালদ্বীপ: ১৩ এপ্রিল নিজেদের গণস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে সরকার সকল বিদেশিকে ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে।
মেক্সিকো: মহামারির অধিকাংশ সময়েই সেদেশে কোনো ভ্রমণ বিধিনিষেধ ছিল না, তবে এখনও যাওয়ারপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক রয়েছে।
মলদোভা: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটিতে ভ্রমণ বিধিনিষেধ পরিবর্তন হয়েছে। এর আগে গত ১৬ মার্চ দেশটি ভ্রমণের সকল কোভিড বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়।
মঙ্গোলিয়া: গত ১৪ এপ্রিল এশিয়ার মূল ভূখণ্ডের প্রথম দেশ হিসেবে সকল আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর জন্য নিজ সীমান্তকে উন্মুক্ত করে দেয়।
মন্টিনিগ্রো: টিকা না নিয়েও যাওয়া যাবে, টেস্ট করানোও বাধ্যতামূলক নয়। গত ১০ মার্চ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে।
উত্তর মেসেডোনিয়া: বলকান অঞ্চলের দেশটিতে ২১ এপ্রিল থেকে সব করোনাজনিত শর্ত বাতিল করা হয়।
নরওয়ে: ১২ ফেব্রুয়ারি থেকেই নেই টেস্টিং, কোয়ারেন্টাইন বা নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা।
আরও যেসব দেশ শর্ত শিথিল করেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পোল্যান্ড, রোমানিয়া, সৌদি আরব, স্লোভেনিয়া, স্লোভাকিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং ইয়েমেন।
সূত্র: ব্লুমবার্গ, দ্য টাইমস।