কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ায় কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিতে অনেক গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উড়ে গেছে শত শত ঘরের টিনের চালা। উপড়ে গেছে অনেক গাছ। ভেঙ্গে ও বেঁকে গেছে শতাধিক পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি।
এছাড়া গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শনিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঝড় শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী ছিল এই ঝড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে শত শত গাছপালা ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে। শত শত হেক্টর জমির আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় আম বাগানের মালিক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাগানের সব আম ঝড়ে পড়ে গেছে। আর এক সপ্তাহ পর আম পাড়া শুরু হতো। কিন্তু ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।’
কৃষক শাহজাহান বলেন, ‘ঝড়ে আমার পেঁপে বাগানের খুব ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ পেঁপে গাছ উপড়ে গেছে।’
কবির আলী নামে একজন বলেন, ‘সকালের ঝড়ে আমার তিনটি ঘরের চালা উড়ে গেছে। এখন মেরামতের কাজ করছি।’
কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে সড়কের দু’পাশে শত শত গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় এলাকাবাসীর সহায়তায় আবার কোথাও ফায়ার সার্ভিসের টিম গাছগুলো সড়ক থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।’
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) মো. মোকসেমুল হাকিম বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে পুরো জেলা লন্ডভন্ড। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে এবং গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক স্থানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা মেরামতের কাজ করছি।’
কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ মামুন আর রশিদ বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ৭ কেটিএফ ঝড় ও ২৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। তবে কুমারখালী উপজেলায় ঝড়ের মাত্রা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে তুলনামূলক কম হয়েছে।’
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রমানিক বলেন, ‘ঝড়ে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিক ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। তবে কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করছে।’