অনলাইন ডেস্ক :

আসন্ন ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬০ জেলায় প্রার্থী ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার রাতে দলের সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। সভায় গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছেন দলের দুর্দিনের নেতারা। প্রার্থী বাছাইয়ে দলের জন্য ত্যাগস্বীকার ও আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময়ের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিকেল ৪টায় গণভবনে সভা শুরু হয়। প্রথমেই ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

সভার শুরুর দিকেই গাইবান্ধা-৫ আসনের সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর জীবনবৃত্তান্ত এবং মাঠ জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনকে দলের প্রার্থী মনোনীত করা হয়। এরপর ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ৬১টি জেলায় ৫০০ জন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আবেদন ফরম কিনেছিলেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা দুর্দিনের নেতাদের ত্যাগ বিবেচনা করে মনোনয়ন দিয়েছি। বিদ্রোহী প্রার্থী যেন কেউ না হন সে বিষয়ে খুবই কঠোর সতর্কতা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আমাদের কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পরিষদে আ. লীগ প্রার্থী যাঁরা
রংপুর বিভাগ : পঞ্চগড় জেলায় আবু তোয়বুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ে মু. সাদেক কুরাইশী, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নীলফামারীতে মমতাজুল হক, লালমনিরহাটে মতিয়ার রহমান, রংপুরে ইলিয়াস আহমেদ, কুড়িগ্রামে জাফর আলী ও গাইবান্ধায় আবু বকর সিদ্দিক।

রাজশাহী বিভাগ : জয়পুরহাটে খাজা সামছুল আলম, বগুড়ায় মকবুল হোসেন, নওগাঁয় এ কে এম ফজলে রাব্বি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে রুহুল আমিন, রাজশাহীতে মীর ইকবাল, নাটোরে সাজেদুর রহমান খাঁন, সিরাজগঞ্জে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও পাবনায় আ স ম আব্দুর রহিম পাকন।

খুলনা বিভাগ : মেহেরপুরে আব্দুস সালাম, কুষ্টিয়ায় সদর উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গায় মাহফুজুর রহমান (মনজু), যশোরে সাইফুজ্জামান পিকুল, মাগুরায় পংকজ কুমার কুণ্ডু, নড়াইলে সুবাস চন্দ্র বোস, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনায় শেখ হারুনুর রশীদ ও ঝিনাইদহে কনক কান্তি দাস। এই বিভাগের সাতক্ষীরায় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

বরিশাল বিভাগ : বরগুনায় জাহাঙ্গীর কবির, পটুয়াখালীতে খলিলুর রহমান, ভোলায় আব্দুল মুমিন টুলু, বরিশালে এ কে এম জাহাঙ্গীর, ঝালকাঠিতে খান সাইফুল্লাহ পনির ও পিরোজপুরে সালমা রহমান।

ঢাকা বিভাগ : টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ফারুক, কিশোরগঞ্জে জিল্লুুর রহমান, মানিকগঞ্জে গোলাম মহীউদ্দীন, মুন্সীগঞ্জে মো. মহিউদ্দিন, ঢাকায় মাহবুবুর রহমান, গাজীপুরে মোতাহার হোসেন, নরসিংদীতে আবদুল মতিন ভূঞা, নারায়ণগঞ্জে চন্দন শীল, রাজবাড়ীতে এ কে এম শফিকুল মোরশেদ, ফরিদপুরে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, গোপালগঞ্জে মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান, মাদারীপুরে মুনির চৌধুরী ও শরীয়তপুরে ছাবেদুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ : জামালপুরে মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্, শেরপুরে চন্দন কুমার পাল, ময়মনসিংহে ইউসুফ খান পাঠান ও নেত্রকোনায় অসিত কুমার সরকার।

সিলেট বিভাগ : সুনামগঞ্জে খায়রুল কবির রুমেন, সিলেটে নাসির উদ্দিন খান, মৌলভীবাজারে মিছবাহুর রহমান ও হবিগঞ্জে ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরী।

চট্টগ্রাম বিভাগ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল মামুন সরকার, কুমিল্লায় মফিজুর রহমান বাবলু, চাঁদপুরে মো. ইউসুফ গাজী, ফেনীতে খায়রুল বশর মজুমদার, নোয়াখালীতে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, লক্ষ্মীপুরে মো. শাহজাহান, চট্টগ্রামে এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ও কক্সাবাজারে মোস্তাক আহমদ চৌধুরী।

গাইবান্ধায় উপনির্বাচনে প্রার্থী রিপন
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন। রিপন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। এই আসনে ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা বুবলীসহ ১০ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।