এবার সাড়ে ৭ কি.মি জার্মান পতাকায় চমক আমজাদ হোসেনের

নিউজ ডেস্ক:

 

সাড়ে ৭ কিলোমিটার জার্মানির পতাকা প্রর্দশন করে চমক সৃষ্টি করেছেন মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ামরা গ্রামের ৭০ বসর বয়সী আমজাদ হোসেন। এটাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পতাকা বলে তিনি দাবি করেন। 

 

জার্মান ফুটবল দলের সমর্থক আমজাদ হোসেন শুক্রবার সদরের নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে তার এ পতাকা প্রদর্শন করেন।

 

২০০৬ সালে প্রথম তিনি দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্য জার্মানির পতাকা তৈরি করেন। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের সময় পতাকার দৈর্ঘ্য গিয়ে দাঁড়ায় আড়াই কিলোমিটারে। ২০১৪ সালে আরো এক কিলোমিটার পতাকা দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার বানান। সবশেষ ২০১৮ সালে পতাকার দৈর্ঘ্য গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ কিলোমিটারে। সে সময় পতাকা বানানোর জন্য দরিদ্র কৃষক আমজাদ তার বাড়ির তিন শতক জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছিলেন।

 

এবার কাতার বিশ্বকাপ উপলক্ষে আমজাদ হোসেন তৈরি করেছেন সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মানির পতাকা। নতুন করে দুই কিলোমিটার পতাকা বানাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা।

২০১৪ সালে জার্মান রাষ্ট্রদূত মাগুরায় আমজাদ হোসেনের বাড়িতে এসে পতাকা উদ্বোধন করেন। সে সময় তাকে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জার্মান ফুটবল দলের ফ্যান ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছে বলে জানান আমজাদ হোসেন।

 

আমজাদ বলেন, বয়স কালে তিনি একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। জার্মানির ওষুধ খেয়ে তিনি সে রোগ থেকে মুক্তি পান। তারপর থেকে তিনি জার্মানির ভক্ত। একইভাবে জার্মান ফুটবল দলকেও তিনি ভালবাসেন। তার এই ভালবাসা থেকে জার্মান দলের সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে তার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।

 

আমজাদ বলেন, এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে ইতিমধ্যে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে কাপড়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। দর্জি দিয়ে সেলাইয়ের যাতায়াত খরচ দিয়ে খরচ হয়েছে বাকি প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা। এবার কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জার্মান দল চ্যাম্পিয়ন হলে তিনি নিজ বাড়িতে কয়েক শত লোকের ভোজ দেওয়াসহ গোটা পতাকা নিয়ে মাগুরা শহরে মিছিল করবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে।

 

মাগুরা ফুটবল একাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বার্কিসহ স্থানীয়রা বলেন, আমজাদ জার্মান পাগল মানুষ। দরিদ্র কৃষক হলেও বিশ্বকাপ ফুটবল এলে তিনি জার্মানির দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে চমক সৃষ্টি করেন। প্রতি বছর তার পতাকার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। এজন্য তিনি নিজের জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।

 

স্থানীয় চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, আমজাদ ২০১০ সাল থেকে জার্মানির পতাকা তৈরি করে আসছে। এ বছর সাড়ে সাত কিলোমিটার পতাকা তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছেন। তার জন্য বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশসহ তার নিজ এলাকা পরিচিতি লাভ করছে। বিগত দিনে তিনি এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জার্মানের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের এলাকায় নিয়ে আসেন। সে কারণে আমজাদ আমাদের এলাকার গৌরব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *