কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির অপমানে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, লম্পট সুজ্জল গ্রেফতার


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির অপমান সইতে না পেরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন নবম শ্রেণির ছাত্রী ফাহিমা।
মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার জগতি এলাকায় নিজের শ্লীলতাহানির সামাজিক বিচার না পেয়ে ফাহিমা নিজ ঘরে আত্মহত্যা করে।


এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে লম্পট সুজ্জলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত ফাহিমা খাতুন ওই এলাকার ফারুক খানের মেয়ে। সে বাড়াদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।


এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক খান বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে দুই স্ত্রী ও এক সন্তানের পিতা অটোরিকশা চালক লম্পট সুজ্জলকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের পথে লম্পট সুজ্জল ফাহিমাকে উত্ত্যোক্ত করত। মঙ্গলবার সকালে ফাহিমা প্রতিবেশীর বাড়িতে দুধ আনতে যাওয়ার পথিমধ্যে লম্পট সুজ্জল গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বিষয়টি বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে জানায় ফাহিমা।
এরপর ফাহিমা যথারীতি স্কুলে যায়। স্কুল থেকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মা সুফিয়া বেগম মেয়ে ফাহিমাকে ডেকে এনে লম্পট সুজ্জলের বাড়িতে গিয়ে বিচার চাইলে সুজ্জলের পরিবারের লোকজন অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজসহ চরম অপমান করে বাড়ি থেকে বেড় করে দেন।
প্রকাশ্যে এমন অপমান সইতে না পেরে সেখান থেকে দৌড়ে বাড়িতে এসে নিজ ঘরের শয়নকক্ষে ওড়না পেঁচিয়ে ফাহিমা আত্মহত্যা করে।


বাড়াদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুর রহমান জানান, ফাহিমা মঙ্গলবারও স্কুলে এসেছিল। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তার মা এসে ডেকে নিয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরেই শুনি ফাহিমা আত্মহত্যা করেছে। পরে জানতে পারি সুজ্জল নামের এক বখাটের শ্লীলতাহানির অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।


নিহত ছাত্রীর মা সুফিয়ার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই লম্পট সুজ্জলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল তার মেয়ে। সামাজিকভাবে বিচার চেয়েও কোনো ফল হয়নি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, স্কুলছাত্রী ফাহিমা আত্মহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে ওই ছাত্রীর পিতার দেয়া মামলার অভিযুক্ত আসামি সদর উপজেলার বাড়াদী এলাকার বদর শাহের ছেলে লম্পট সুজ্জলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে আরও জড়িত প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *