জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠের ফজিলত

ইসলামী ডেস্ক : কোরআন মজিদের ১৮ নম্বর সুরার নাম ‘আল-কাহফ’। এর রুকু সংখ্যা ১১ এবং আয়াত ১১০টি। সুরাটি মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হয়েছে, তাই তাকে ‘মক্কি সুরা’ বলা হয়। এই সুরায় কুরাইশদের তিনটি প্রশ্নোত্তরসহ মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। সুরাটির অনেক ফজিলতও আছে। যেমন—ইমাম মুসলিম (রহ.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে।’ সুরাটির অন্যান্য ফজিলতের মধ্যে আজ শুধু জুমার দিনে সুরাটি তিলাওয়াত করলে কী কী লাভ, এখানে তা আলোচনা করা হলো—

দুই জুমার মাঝের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়

ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার পায়ের নিচ থেকে আসমান পর্যন্ত নূর প্রজ্বালিত করা হবে এবং কিয়ামত দিবস তার জন্য উজ্জ্বল হবে আর দুই জুমার মাঝের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সূত্র : তাফসিরে ইবনে কাসির, খণ্ড ৬, পৃ. ৩৯৮) ইমাম সাইদ ইবনে মনসুর (রা.) তাঁর ‘সুনান’ গ্রন্থে হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, যেই ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার কাছ থেকে বায়তুল্লাহ শরিফ পর্যন্ত নূর চমকাবে। (প্রাগুক্ত)

হাকিম (রহ.) তাঁর ‘মুস্তাদরাক’ গ্রন্থে লিখেছেন, আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে মুআম্মাল (রহ.) আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। (প্রাগুক্ত)

শুবা (রহ.)-এর সূত্রে আবু হাশেম থেকে তাঁর সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহফ যেমন অবতীর্ণ হয়েছে, তেমনি তিলাওয়াত করবে, কিয়ামতের দিন তা তার জন্য নূর হবে। (প্রাগুক্ত)

হাফিজ জিয়া মাকদেসি (রহ.) তাঁর ‘মুখতার’ গ্রন্থে হজরত আলী (রা.)-এর একটি হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যেই ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার বিপদ থেকে রক্ষা পাবে। যদি দাজ্জালের আবির্ভাব হয়, তবে তার বিপদ থেকেও রক্ষা পাবে। (প্রাগুক্ত)

যাঁরা কোরআনে হাফেজ, আমলটি তাঁদের জন্য খুব সহজ। আর যাঁরা দেখে দেখে কোরআন পাঠ করতে পারেন তাঁরা দেখে দেখে সুরাটি পাঠ করবেন। জুমার দিন যখন ইচ্ছা তখন তিলাওয়াত করতে পারেন, তবে আমরা যারা কোরআনের হাফেজ নই বা দেখে দেখে সহিহভাবে পড়তে পারি না, তাদের প্রথমে একজন আলেম ঠিক করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য অন্ততপক্ষে পাঁচটি সুরা সহিহ-শুদ্ধ করে শিখে নেওয়া জরুরি, যেটি একজন মুসলমানের জন্য ফরজ। সেই সঙ্গে দৈনন্দিনের আমলের বড়-ছোট সুরাগুলো শুদ্ধ করে নেওয়া খুব জরুরি। যেমন—‘চার কুল’, সুরা ইয়াসিন, ওয়াকিয়া, সুরা মুলক এবং সাপ্তাহিক সুরা আল-কাহফ ইত্যাদি।

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *