Site icon দেশের পত্রিকা – দেশের পত্রিকা দেশের কথা বলে

বেইলি রোডে অগ্নিকান্ডে নিহত কুষ্টিয়ার মেয়ে বৃষ্টি খাতুন খোকসায় গ্রামের বাড়ীতে দাফন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকান্ডে নিহত কুষ্টিয়ার মেয়ে বৃষ্টি খাতুনের লাশ কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত দশটার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার নিজ গ্রাম বনগ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে তাঁর লাশ রাত আটটার দিকে নিজ বাড়িতে পৌছায়।

 

রাত দশটার দিকে এতথ্য নিশ্চিত করেন খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা। তিনি বলেন, বৃষ্টির পরিবারের সাথে সব সময়  যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। রাতে লাশ আসার পর তার বাড়িতে আসা হয়। রাত দশটায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

 

রাত পৌনে ১০টার দিকে বনগ্রাম পশ্চিম পাড়ার জামে মসজিদের মাইকে বৃষ্টির জানাযার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় মরহুমার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সমাজ ও আশে,পাশের গ্রামের ৪/৫শ মানুষ এই জানাজায় সরিক হন। রবিউল ইসলাম নামের একজন নিকট আত্মীয় বৃষ্টির জানাযার নামাজে ইমামতি করেন। জানাযা পরার পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চাচা মোবারক শেখের কবরের পাশে বৃষ্টিকে সমাহিত করা হয়।

 

মেয়ের লাশ বাহী এ্যাম্বুলন্স থেকে নেমেই সাবলুল আলম সবুজ চক্রান্তকারীদের বিচারের দাবি করেন। এ ছাড়া বেইলি রোডের অগ্নিকান্ডে নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। মেয়ের মৃতদেহ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।

 

বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় সাংবাদিকতা করতেন। তিনি সেখানে অভিশ্র“তি নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম রয়েছে। তাঁর বাবার নাম সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন। তাঁরা তিন বোন। বৃষ্টি ছিলেন সবার বড়।

 

এর আগে বিকেলে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ বুঝে পান তাঁর পরিবার। অগ্নিকান্ডের ১১ দিন পর গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ তাঁর বাবা সবুজ শেখের কাছে হস্তান্তর করেন।

 

গত রোববার সিআইডি জানিয়েছিল, অভিশ্র“তি শাস্ত্রী নামে পরিচিত সাংবাদিকের সঙ্গে সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে। অভিশ্র“তি শাস্ত্রী নামে ঢাকার একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করতেন এই তরুণী। বাবা-মায়ের দেওয়া তাঁর নাম ছিল বৃষ্টি খাতুন।

 

গত ২৯ ফেব্র“য়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন নিহত হন। তাঁদের ৪৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে অভিশ্র“তি শাস্ত্রী এবং নাজমুল হোসেন নামে দুজনের মরদেহের একাধিক দাবিদার থাকায় তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির সামনে বৃষ্টির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজায় খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আকতার, ওসি আননূন যায়েদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া লাশ দেখতে ও পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিতে তাঁর বাড়িতে যান খোকসা ইউএনও ইরুফা সুলতানা। জানাজা শুরুর আগে বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।

Exit mobile version