চুয়াডাঙ্গায় কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পশুহাট

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি :

 

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় জমে উঠেছে পশুর হাট। এ জেলায় পশুহাট রয়েছে চারটি। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভিড়।

 

ব্যবসায়ী ও খামারিরা জানিয়েছেন কোরবানির পশুর দামও ভালো। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় এখন গরু ও ছাগলের দাম তুলনামূলক বেশি।

 

১০ জুন, সোমবার জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি পশুহাটে গরু বিক্রি করতে আসা হাবিল উদ্দীন বলেন, অন্যদিনের তুলনায় আজকের হাটে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা এসেছেন। এ কারণে গরুর দামও বেশি। আজ হাটে পাঁচটা গরু এনেছিলাম। সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে গেছে। লাভও বেশি হয়েছে।

 

একই হাটে গরু কিনতে আসা রোমেল খান নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানি করার জন্য গরু কিনতে এসেছি। এ বছর গরুর দাম অন্যবারের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাম বেশি মনে হচ্ছে। যেহেতু কোরবানি করতে হবে তাই বেশি দাম দিয়েই গরু কিনতে হচ্ছে।

 

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বেশ কয়েকজন গরুর ব্যাপারি বলেন, প্রতিবছরই এ হাটে আসি। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার গরুর আমদানি বেশি। তবে দামও একটু বেশি।

 

দামুড়হুদার এক খামারি বলেন, আমার খামারে এবার মোট ১৫টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যদি গরুর দাম বর্তমান বাজারমূল্যে থাকে তাহলে খামারিরা লাভবান হবেন।

 

আরও এক খামারি বলেন, আমার খামারে বর্তমানে ১০টি গরু রয়েছে। যার মধ্যে তিনটি গরু বিক্রি করেছি। বাকি গরু ঈদের মধ্যে বিক্রির আশা করছি।

 

জীবননগরের লক্ষ্মীপুর গ্রামের এক খামারি বলেন, আমার খামারে ৪০টি কোরবানি উপযুক্ত গরু ছিল। ৩৫টি গরু এরই মধ্যে বিক্রি করেছি। এখনো খামারে ১০টি গরু আছে। এই গরুগুলো বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত বলতে পারছি না লাভ হবে নাকি লোকসান হবে।

 

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে সর্বমোট ১০ হাজার ৯১৭টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২ হাজার ৬৭৬টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩ হাজার ৫৯৯টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ১ হাজার ৯২৮টি এবং জীবননগর উপজেলায় ২ হাজার ৭১৪টি।

 

এসব খামারে কোরবানি উপলক্ষ্যে ২ লাখ ১১ হাজার ৮৭৯টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার ৮৯১টি, মহিষ ১৬০টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬টি, ভেড়া ৩ হাজার ৯২টি এবং অন্যান্য ৭টি।

 

এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬টি। সে হিসাবে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৫৩ হাজার ২৩টি কোরবানিযোগ্য পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

 

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলায় এবার কোরবানির জন্য ৫৪ হাজার ৯৭৯টি গরু ও মহিষ মোটাতাজা করা হয়েছে। এছাড়া এবার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮২১টি ছাগল ও ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, জেলার বিভিন্ন পশুহাট ও খামারগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। খামারিদের পালন করা পশু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার চাহিদা পূরণ করবে। খামারিরা এবার কোরবানির পশুর ন্যায্যমূল্য পাবেন।

 

এদিকে চুয়াডাঙ্গার পশুহাটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। গরুর হাটে জাল নোট ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ঠেকানোর জন্য পুলিশের নজরদারি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *