Site icon দেশের পত্রিকা – দেশের পত্রিকা দেশের কথা বলে

” রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ” মানবিক ইস্যু হিসেবেই এর সমাধান করতে হবে

এহছান খান পাঠান (বার্তা সম্পাদক, দৈনিক অর্থনীতির কাগজ) : রাষ্ট্রহীন মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়ার মধ্য দিয়ে এক মানবিক বাংলাদেশ, মানবিক বাঙালি দেখতে পেয়েছিল বিশ্ব। তবে অনুপ্রবেশের দু’বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হয়নি বরং তাদের নিয়ে বিপদ বাড়ছেই বাংলাদেশের। প্রথমদিকে অনুকম্পা দেখালেও এখন বিরক্তির দৃষ্টিতে দেখছে সাধারণ জনগনসহ নীতিনির্ধারকরা। রোহিঙ্গাদের কর্মকাণ্ড জোরালোভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। মোবাইল সেবাও বন্ধ।
জনমনে প্রশ্ন; কবে ফেরত যাবে রোহিঙ্গারা? আদৌ কি ফেরত যাবে? অথবা এ সংকটের ভবিষ্যৎ কী?
আমার ধারণা রোহিঙ্গারা রাজি থাকলেও প্রত্যাবাসন আপাতত সম্ভব না। কারণ পুরো আরাকান জুড়েই যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান। এর আগে রোহিঙ্গারা ফেরত গেছে, তখন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল এবং চীনের ভূমিকা বাংলাদেশের পক্ষে ছিল।
বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র থেকে মিয়ানমার এখন অনেকটাই গণতন্ত্রমুখী। এ কারণে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে এক ধরনের আকর্ষণ তৈরি করে ভারত এবং চীনকে পাশে রাখছে মিয়ানমার।
বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারত এবং চীনের ভালো সম্পর্ক এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, মিয়ানমারে চীন এবং ভারতের স্বার্থ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণেই মিয়ানমারকে সমর্থন দিচ্ছে তারা।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার যেমন মানবিক দিক আছে, তেমনি বাংলাদেশের নিরাপত্তার দিকও আছে। দীর্ঘ সময় বিপদের মধ্যে থাকা বঞ্চিত এই জনগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে যে কোনো ঝুঁকি নিতে পারে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে, আমাদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক নির্যাতন সত্ত্বেও পুরো জনগোষ্ঠী কিন্তু দেশ ছেড়ে পালায়নি। এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশী এবং বিদেশী এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের ফেরত না যেতে উৎসাহিত করছে। আবার বাংলাদেশকে নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক খেলা চলছে সেটা অস্বীকার করারও সুযোগ নেই।
তবে মানবিক ইস্যু হিসেবেই এর সমাধান করতে হবে। আমরা জোর করে তাদের বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারি না। এ কারণেই সব পথ খোলা রেখেই সমাধান করতে হবে।’

Exit mobile version