বেনাপোল চেকপোস্টে হয়রানি বন্ধে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি :

 

বেনাপোল চেকপোস্টকে দালালমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের শুরু থেকেই বহিরাগতদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশের দেশ ভারতে যাওয়া ও সেখান থেকে বাংলাদেশে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। ফলে পাসপোর্ট যাত্রী ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের ভেতর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

 বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিমের নির্দেশে ডেপুটি কমিশনার আথেলো চৌধুরী গত রবিবার এই আদেশ জারি করেন। এ জন্য চেকপোস্ট টার্মিনালে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন ও সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া সশস্ত্র আনসার ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে বহিরাগতদের।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে এক শ্রেণির দালালরা দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। তারা যাত্রীদের পাসপোর্টের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ নিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর কাস্টমস-ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা দেন কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন। যাত্রীদের সেবার মান উন্নত করতে চেকপোস্ট টার্মিনালে বহিরাগত দালালদের উত্খাতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

যাতে টার্মিনাল এলাকায় বহিরাগত কোনো দালাল ঢুকতে না পারে, সে বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে।  

সূত্র জানায়, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে গত ছয় মাসে ১১ লাখ ২০ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছে। যাত্রীদের কাছ থেকে এ সময় বিদেশে ভ্রমণকর বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১০ কেটি টাকা। পাঁচ বছরের শিশু, প্রতিবন্ধী ও ক্যান্সার রোগীরা (ভ্রমণকর মওফুফ) এই আওতার বাইরে রয়েছে।

 

সূত্র আরো জানায়, যাত্রী টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপত্তাকর্মী, আনসার সদস্য, আর্মড  ব্যাটালিয়ন ও কাস্টমস কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখায় প্রবেশ করতে পারছে না বহিরাগত দালালরা।

 

বর্তমানে পাসপোর্টধারী যাত্রী সংখ্যাও বেড়েছে ব্যাপক হারে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সেবার মান বাড়ানোর কারণে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন নিজেরাই। 

বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি আযহারুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ছয় থেকে আট হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। তাদের সেবার মান বাড়াতে ইমিগ্রেশন ডেস্কের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। তারা এখন নিজেরা নির্বিঘ্নে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে কাজ সেরে নিচ্ছেন।

 

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাদের। বর্তমানে কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই যাত্রীরা ভারত-বাংলাদেশে যাওয়া-আসা করছে। সব ধরনের লাগেজ ব্যবসার তত্পরতা বন্ধ করা হয়েছে। কোনো ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে বহিরাগত লোকজনরা প্রবেশ করতে পারবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *