ভারতবিরোধী পোস্টে লাভ রিয়্যাক্ট দেশে ফেরত পাঠানো হলো বাংলাদেশি ছাত্রীকে

অনলাইন ডেস্ক :

 

ভারতবিরোধী পোস্টে ‘লাভ’ রিয়্যাক্ট দেওয়ায় দেশে পাঠানো হলো বাংলাদেশের এক ছাত্রীকে। 

আসামের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) ওই শিক্ষার্থীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

 

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ওই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এনআইটি শিলচরে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগে পড়তেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভারতবিরোধী পোস্টে ‘লাভ’ রিয়্যাক্ট দিয়ে সমর্থন জানান তিনি। এরপরেই সোমবার তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

অবশ্য কাছাড় পুলিশের কর্মকর্তা নুমাল মাহাট্ট দাবি করেছেন, ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়নি, বরং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরই দেশে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার নুমাল বলেন, ~ওই শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কলেজেরই এক প্রাক্তন ছাত্রের ভারতবিরোধী পোস্টে সমর্থন জানিয়েছিলেন। ওই ছাত্রও বাংলাদেশি। ছয় মাস আগে পড়াশোনা শেষ করে ভারত ছেড়েছেন তিনি।”

পোস্টদাতা ওই প্রাক্তন ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে একটি সংগঠন।

সংগঠনের মুখপাত্র শুভাশিস চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতবিরোধী পোস্টটিতে প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীর লাভ রিয়্যাক্ট তাদের নজরে আসে। কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন তারা। পোস্টে ছাত্রীর সমর্থনের বিষয়টি চোখে পড়ার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এনআইটির পরিস্থিতি। এরপর নিজেই কর্তৃপক্ষের কাছে দেশে ফিরে যাওয়ার আবেদন করেন ওই ছাত্রী।

তবে, এনআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী নিজের ইচ্ছাতেই কিছুদিনের জন্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। রবিবার ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন। তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ছাত্রী যথাযথ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। ছাত্রী তার নিজের ইচ্ছানুযায়ীই বাড়ি গিয়েছেন। তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন এনআইটি’র রেজিস্ট্রার। এছাড়াও ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, পুলিশ সুপার জানান, বাংলাদেশের প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী শিলচর এনআইটি’র বিভিন্ন শাখায় পড়াশোনা করছে। জানা গেছে, ভারতবিরোধী পোস্ট করেছিলেন বাংলাদেশের এক প্রাক্তন ছাত্র। সেও আগে ওই প্রতিষ্ঠানে পড়ত। সেই পোস্টেই সমর্থন করেছিলেন এই ছাত্রী। 

এসপি বলেন, “আমরা ছাত্রের ভারতবিরোধী পোস্টের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলতে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে বলেছি।”

গত ২২ আগস্ট আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শুভাশিস চৌধুরী প্রথম এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। তিনি ছাত্রের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোর কিছু স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। পরে শিলচর এবং আসামের অন্যান্য অঞ্চলে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপরই পুলিশ সুপার ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন এবং তদন্ত শুরু হয়। পরে তিনি জানতে পারেন ওই ছাত্র ইতোমধ্যেই ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে রয়েছে।

শিলচর এনআইটি’র ডিরেক্টর, প্রফেসর দিলীপ কুমার বৈদ্য বলেছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন। তারা প্রতিষ্ঠানে শান্তি, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছেন, যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। বাংলাদেশসহ বিদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। তারা যেন অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে থাকে তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”

তিনি জানান, তদন্তে এনআইটি কর্তৃপক্ষ পুলিশকে সহযোগিতা করবে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *