কুষ্টিয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার তদন্ত শুরু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান। এসময় ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করেন তিনি। পিবিআই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার শহীদ মো. সারোয়ার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট ৮ জন নিহত হন। এ ঘটনায় ১০ আগস্ট হতে অদ্যবধি কুষ্টিয়া মডেল থানা ও আদালতে ডজনাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা অভিযোগে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ রাজনৈতিক নেতাদের নাম এজাহারভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা ফেরিওয়ালা বাবলু হত্যার অভিযোগে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে ১৯ আগস্ট আদালতে মামলা করেন। মামলা নং ১১৫১/২০২৪। এজাহারে কুষ্টিয়া পুলিশের ৭ কর্মকতার নাম রয়েছে। 

 

যদিও কুষ্টিয়া মডেল থানায় পৃথকভাবে নিহত ও আহতের ঘটনায় পরিবার এবং থানায় হামলা ভাঙচুর অস্ত্রলুটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের করা মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে করা এজাহার হয়েছে দুটি মামলাতে।

 

পুলিশের গুলিতে নিহত ফেরিওয়ালা বাবলু হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আদালতে করা মামলার এজাহারে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও ৭ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। নাম না জানা আরও ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতের বিচারক মাহমুদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। 

 

এজাহার নামীয় সাত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুল হক চৌধুরী, পুলিশ পরিদর্শক দীপেন্দ্রনাথ সিংহ, উপপুলিশ পরিদর্শক সাহেব আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ও উজ্জল হোসেন।

 

মামলার বাদী সুজনের অভিযোগ, হত্যার অভিযোগ এনে মডেল থানায় এজাহার দিলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতের বিচারক মাহমুদা সুলতানার আদালতে মামলাটি আমলে নেন।

 

পিবিআই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার শহীদ মো. সারোয়ার জানান, পিবিআই-এর পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান তদন্ত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে বেশকিছু প্রাসঙ্গিক আলামত ও ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। আদালতের দেওয়া সময়ের মধ্যেই পিবিআই একটা প্রতিবেদন দাখিল করতে সক্ষম হবে। তারপর আদালতের যা আদেশ হয় সে মোতাবেক আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *