কুষ্টিয়ায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত জনদুর্ভোগ চরমে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়ায় নিম্নচাপের প্রভাবে রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪ দশমিক ৪৪ ইঞ্চি (১১৩ মিলিমিটার) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালি আবহাওয়া কার্যালয়।

গত শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শনিবার বিকেল থেকে রূপ নেয় ভারী বৃষ্টিপাতে। পরে মধ্যে রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত দমকা ঝড়ও-হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়।

এদিকে রবিবার রাত ২ টা থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো দৌলতপুর উপজেলা। ১২ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে চরম জন দুর্ভোগ দেখা দেয়। ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ও-হাওয়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে দৌলতপুর উপজেলার নিম্ন ও মধ্যে আয়ের মানুষ। ঘর থেকে খুব একটা বের হয়নি স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

বিপাকে পড়েছেন ছোট বড় গো-খামারি, ডুবেছে ফসলের মাঠ। সকালে উপজেলার হোসেনাবাদ বাজারে কথা হয় দেলুয়ার হোসেন নামের এক অটোরিকশা চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাত থেকে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস হচ্ছে। সকালে গাড়ি নিয়ে বাইরে আসলাম ভাড়ার উদ্দেশ্যে। তবে রাস্তায় তেমন একটা মানুষের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।

জাহিদুল ইসলাম নামের এক খামারি বলেন, বৃষ্টির কারণে গরু-ছাগলের জন্য কাঁচা খাবার আনতে পারছি না। ঠিকমতো খাবারও দিতে পারছি না।

কথা হয় উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন ধর্মদহ গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে, তিনি জানিয়েছেন, তাদের এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়েছে। মরিচ, টমেটো, কালায় ও তুলার খেত ডুবে গেছে।

বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে দৌলতপুর পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মির্জা কে ই তুহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রবিবার ভোর রাত থেকে উপজেলা পুরো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে বেশ কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়েছে, দুটি বৈদ্যুতিক পোল ভেঙে গেছ। গাছ উপড়ে পড়েছে তারের ওপর। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু হবে। তবুও আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে।

কৃষির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে কলা, তুলা, মরিচ, সবজি ও কালায়ের হিসাব পেয়েছি।’

এদিকে আবহাওয়া নিয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, চলতি বছরে গেল ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে ১২ জুলাই ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আগামী সোমবার থেকে আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *