কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে মহাসড়ক অবরোধ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

পদ্মার ভয়াল ভাঙনের মুখে পড়েছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া, বহলবাড়ীয়া ও সাহেবনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এসব এলাকার শত শত বিঘা ফসলি মাঠ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙন থেকে বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় লোকজন। 

 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটিতে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে সড়ক ছাড়েন আন্দোলনকারীরা।

 

আন্দোলনকারীরা বলেন, আমাদের শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমাদের বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের ঘরের কাছে চলে এসেছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে চলে যেতে পারে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। নদী ভাঙন সমস্যার সমাধান না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। 

 

তারা আরও বলেন, পদ্মার তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে বহলবাড়ীয়া, বারুইপাড়া, তালবাড়ীয়া, খাদিমপুর, সাহেবনগর, মির্জানগর ও ঘোড়ামারাসহ বেশ কিছু এলাকা।  বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের ছয়টি বিদ্যুৎ সঞ্চালনের টাওয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা ভাঙনের মুখে আছে। কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক থেকে নদী মাত্র ৫০ মিটার দূরে আছে। সড়কটি যেকোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়তে পারে।

 

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নদী ভাঙন রোধে সরকারিভাবে ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও চলতি মৌসুমে কোনো জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। দ্রুত এই প্রকল্পের টাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তারা। 

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার বলেন, দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছাড়েন। আটকে থাকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, সাহেবনগর বেড়িবাঁধসহ ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

 

তিনি আরও বলেন, টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি ২-৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমরা ব্যাপারটি অবজারভেশনের মধ্যে রেখেছি। কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ও বেড়িবাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় সেখানে দ্রুত জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলার কাজ শুরু হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *