‘দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সব পূজা-অর্চনা’

ডিপি ডেস্ক :

 

আগামীকাল রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতীমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে, আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে মন্দির-মণ্ডপে শেষ হয়েছে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সব পূজা-অর্চনা। এ বছর নবমী-দশমী তিথি একসঙ্গে হওয়ায় একই দিনে শেষ হলো দুর্গাপূজার মূল আয়োজন। 

 

পুরোহিত নির্মল চক্রবর্তী বলেছেন, হিসাব মতে, পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মহানবমী। ষষ্ঠীর দিন থেকে হিসেব করলে আজ ছিল চতুর্থ দিন। তবে, এবার পঞ্জিকার হিসাবে তিথিচক্রে ছিল জটিলতা। ষষ্ঠী থেকে শুরু করে প্রতিটি তিথিই শেষ হয়েছে দিনের শুরুতে, কখনোবা সূর্যোদয়ের সাথে সাথে। তিথি অনুযায়ী আজ ভোরে নবমী শেষে সকাল ৯টার মধ্যেই শাস্ত্রীয়ভাবে দেবী দুর্গার দর্পণ বিসর্জন অর্থাৎ বিজয়া দশমী।

 

আরেক পুরোহিত সুবল চক্রবর্তী বলেছেন, গতকাল (শুক্রবার) পূজামণ্ডপে সকাল পৌনে ৮টার মধ্যে মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা সমাপ্তের সাথে সাথে সন্ধিপূজা হয়। আজ (শনিবার) ভোর ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে নবমী তিথি শেষ হওয়ায় অধিকাংশ পূজামণ্ডপে গতকাল শুক্রবার মহাষ্টমীর পর দুপুরেই মহানবমীর বিহিত পূজা শেষে যজ্ঞানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। 

 

মন্দিরের পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শাস্ত্র মতে ষষ্ঠীর বোধন পূজার মধ্যে দিয়ে দশভূজা ত্রিনয়নী দেবী দুর্গা এবছর দোলায় চড়ে (পালকি) স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোক আসেন। পৃথিবীর সকল অন্যায়-অবিচার ও দুঃখ, দুর্দশা ও গ্লানি মুছে বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ঘোটকে চড়ে (ঘোড়ায়) সন্তানদের নিয়ে মর্তলোকে ফিরে যাবেন। সপ্তমী তিথিতে মাটির মূর্তিতে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় এবং দশমী তিথিতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে দেবীকে মর্ত্যলোক থেকে বিদায় জানান ভক্তরা। 

 

পুরোহিত সুবল চক্রবর্তী বলেন, যেহেতু শত শত বছরের রীতি অনুযায়ী শারদীয় দুর্গোৎসব পাঁচ দিনের অনুষ্ঠান হিসেবেই চলছে, সে হিসেবে আগামীকাল (রোববার) শুধুই মণ্ডপগুলোতে থাকবে বিজয়া দশমীর উৎসব। থাকবে না কোনো ধর্মীয় বা শাস্ত্রীয় রীতিনীতি। বিজয়া দশমীর উৎসব হিসেবে দিনটি পার করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

 

কয়েকটি পূজামণ্ডপে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ শাস্ত্রীয় রীতি অনুযায়ী পূজা শেষ হলেও বাঙারি হিন্দুদের ঐতিহ্যের জন্য আরো এক দিন প্রতিমা রাখা হচ্ছে। আগামীকাল সিন্দুর খেলা এবং মিষ্টিমুখের পর বিসর্জন হবে প্রতিমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *