মুসলিমদের অধিকার ইস্যুতে মুখোমুখি চীন-পশ্চিম

অনলাইন ডেস্ক :

 

জিনজিয়াং ও তিব্বতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও আরো ১৩টি দেশ মঙ্গলবার জাতিসংঘে চীনের সমালোচনা করেছে। জবাবে চীন দেশগুলোর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ‘নারকীয় পরিস্থিতি’ উপেক্ষার অভিযোগ এনেছে।  

 

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর ও জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রায়ই উইঘুর ও অন্য মুসলমানদের সঙ্গে চীনের আচরণ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক দেখা যায়। দুই বছর আগে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চীন জিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্য মুসলমানদের ‘নির্বিচারে ও বৈষম্যমূলকভাবে আটক’ করছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।সেখানে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ ঘটনা ঘটেছে।

 

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার কমিটিকে অস্ট্রেলিয়ার সেখানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জেমস লারসেন বলেন, ‘আমরা চীনের প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা মানতে তাগিদ দিচ্ছি। কারণ দেশটি তা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছিল।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘এসবের মধ্যে রয়েছে জিনজিয়াং ও তীব্বতে নির্বিচারে গ্রেপ্তারকৃত সবাইকে মুক্তি দেওয়া এবং যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের সঙ্গে কী ঘটেছে ও তাদের বর্তমান অবস্থা তাদের পরিবারকে দ্রুত জানানো।

 

অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আইসল্যান্ড, জাপান, লিথুয়ানিয়া, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন ও ব্রিটেনের পক্ষে এই বক্তব্য দেন জেমস লারসেন।  

 

বেইজিং অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং মঙ্গলবার পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে ‘দ্বন্দ্ব উসকে দিতে মিথ্যার’ আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘চলতি বছর যেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রতি কমিটির নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত সেটি হচ্ছে গাজা।

অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য কিছু রাষ্ট্র একদিকে যেমন সেখানকার নারকীয় পরিস্থিতির দিকে প্রয়োজনের তুলনায় কম গুরুত্ব দিচ্ছে, অন্যদিকে শান্ত ও স্থির জিনজিয়াংয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ করছে ও কালিমা লেপন করছে।’ 

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালালে এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়। পাশাপাশি ২৫০ জনের মতো মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল গাজায় হামলা চালাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।সেই সঙ্গে অঞ্চলটির ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তচ্যুত হয়েছে।

 

ফু জানান, যদি গাজায় নিহতের সংখ্যা কিছু ‘পশ্চিমা রাষ্ট্রের বিবেক জাগ্রত না করে…তাহলে তাদের মুসলমানদের মানবাধিকার রক্ষার তথাকথিত আহ্বান সবচেয়ে বড় মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নয়।’

 

গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন জানানোয় গত মাসে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা অধিকাংশ পশ্চিমা রাষ্ট্রের সমালোচনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *