অনলাইন ডেস্ক :
বুধবার (৩০ অক্টোবর) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ( প্রথম পর্যায়) কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকতার ওপর জনগণের প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে সাংবাদিকতাকে জনগণ নতুন করে দেখতে চায়। সে জন্য গণমাধ্যমের সংস্কার প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সরকার গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সাংবাদিকদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের দেশ ও জনগণের জন্য লিখতে হবে এবং কথা বলতে হবে। গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করবে, জনগণ এমনটাই প্রত্যাশা করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গত ১৬ বছরে গণমাধ্যম এই ভূমিকা পালন করতে পারেনি। যেসব সাংবাদিক ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করেছেন, তারা সাংবাদিক নন। তারা সাংবাদিকতাকে ব্যবহার করে গণমাধ্যমকে কুলষিত করেছেন। যেসব সাংবাদিক গত সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁরাই গণমাধ্যমকে প্রতিনিধিত্ব করেন।’
সাংবাদিকদের হয়রানি প্রতিরোধ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা হলে তিনি এই কমিটিকে জানাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের পাশে দাঁড়াবে।’
গণমাধ্যমের কালাকানুন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় যেসব আইন অন্তরায়, সেসব কালাকানুন বাতিলের জন্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার আন্তরিকতার কারণে খুব কম সময়ের মধ্যে সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে।’
সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সাংবাদিকদের সততা, পেশাদারিত্ব ও ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খায়রুল বাশার, শাহীন হাসনাত, মো. আলাউদ্দিন, মীর মুশফিক আহসান ও সাজিদ আরাফাত।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ৩৫০ জন সাংবাদিকের মাঝে মোট ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।