মোটরসাইকেল কিনে দেয়নি মা, ক্ষোভে নিজেকে শেষ করলেন শিক্ষার্থী

ফরিদপুর প্রতিনিধি :

 

কলেজে যাওয়া-আসার জন্য মায়ের কাছে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার বায়না ধরেছিল কলেজশিক্ষার্থী সঞ্জয় কর্মকার (২২)। তবে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনার খবর দেখে ছেলের জীবনের কথা চিন্তা করে মোটরসাইকেল কিনে দিতে রাজি হয়নি মা তুলসী কর্মকার। যে কারণে ক্ষোভে মায়েরই শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে নিজের জীবন শেষ করে দিলেন সঞ্জয় কর্মকার। 

ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের যদুরদিয়া গ্রামে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ ঘরের আড়া থেকে সঞ্জয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সঞ্জয় যদুরদিয়া গ্রামের মৃত মন্টু কর্মকারের ছেলে। সঞ্জয় ভাঙ্গা কে এম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

নিহতের স্বজনরা জানান, সঞ্জয়ের বাবা নেই। তাই কলেজে যাতায়াতের জন্য গত কয়েকদিন ধরে তার মাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল সঞ্জয়। তবে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহতের খবর দেখে রাজি হয়নি মা। এতে ক্ষোভে ফুসে ছিল সঞ্জয়।
সম্প্রতি সঞ্জয়, বড় ভাই জয় কর্মকার, তাদের মা তুলসী কর্মকার (৬০) ঢাকায় নানা বাড়ি বেড়াতে যান। কিন্তু মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে কাউকে না জানিয়ে সঞ্জয় একা বাড়িতে ফিরে আসেন। 

তার বাড়িতে ফিরে আসা দেখে রাতে খাবারের জন্য সঞ্জয়কে চাচা-চাচি ডাকাডাকি করেন। এতে সাড়া না দিলে ঘুমিয়ে আছে ভেবে আর ডাকেনি করেনি। কিন্তু সকালেও তার সাড়া না পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাচার বাড়ির লোকজন এসে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন সঞ্জয় ঘরের কাঠের আড়ার সঙ্গে তার মায়ের শাড়ি কাপড় গলায় পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলী বলেন, নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ ময়নাতদন্তের না দিয়ে সৎকারের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *