কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্যের দাবিতে কৃষকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পেঁয়াজ উৎপাদনে বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়ায় ন্যায্যমূল্যের দাবিতে খলিশাকুন্ডি বাজারে মানববন্ধন শেষে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এর ফলে সড়কের দুইপাশে দীর্ঘ যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে দুপুর আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

 

২৬ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে মানববন্ধন শেষে কৃষকরা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের খলিশাকুন্ডি বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেলে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

বিক্ষুব্ধ কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাদের রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বাড়তি মূল্যে পেঁয়াজের বীজ কিনে দ্বিগুণের বেশি খরচ করে পেঁয়াজের চাষ করতে হয়েছে। কিন্তু পেঁয়াজ উত্তোলন মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করায় বড় দরপতন ঘটেছে পেঁয়াজের বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার পাইকারি বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম মনপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা কমে যাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচও উঠছে না। পাশাপাশি বিরুপ আবহাওয়ায় ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন তারা। তাই আমদানি বন্ধ করে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির দাবি করেন বিক্ষোভরত কৃষকরা।

 

কৃষকরা আরো জানান, এ বছর পেয়াঁজ বীজ ও সারের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। কিন্তু বর্তমানে প্রতি মন পেয়াঁজ বিক্রয় হচ্ছে মাত্র ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, যা খরচের প্রায় অর্ধেক। এতে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। বর্তমানে ক্ষেত থেকে পেয়াঁজ উত্তলনের শুরুতেই পেয়াঁজের বাজার নেমে দাড়িয়েছে প্রতি কেজি ২৭ থেকে ৩৫ টাকা দরে, যার ফলে ব্যাপক লোকশানের মুখে পড়েছেন তারা। তাই বাইরে থেকে পেয়াঁজ আমদানি বন্ধসহ পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। একই দাবিতে বুধবার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা একইস্থানে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে।

 

কৃষকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এটি একটি জাতীয় বিষয়। আমরা কৃষকদের সাথে কথা বলছি, তাদের বুঝাতে চেষ্টা করছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কৃষকরা তাদের অবরোধ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। সড়কের উভয়পাশে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *