অনলাইন ডেস্ক :

জুলাই বিপ্লবের পর গত বছরের ৪ আগস্ট থেকে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলায় অন্তত ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আজ শনিবার পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

প্রেস উইং জানায়, ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ দায়ের করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে নিয়মিত মামলা, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ১ হাজার ৭৬৯টি অভিযোগের মধ্যে অধিকাংশ ঘটনায় পুলিশ তদন্তে দেখেছে যে, হামলাগুলো সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল না, বরং তা রাজনৈতিক প্রকৃতির ছিল। পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে, ১ হাজার ২৩৪টি ঘটনা রাজনৈতিক, ২০টি ঘটনা সাম্প্রদায়িক এবং অন্তত ১৬১টি অভিযোগ মিথ্যা বা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অভিযোগ অনুযায়ী, ১ হাজার ৪৫২টি ঘটনা অর্থাৎ মোট অভিযোগের ৮২ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দিন ঘটে। পরিষদের মতে, ৪ আগস্ট ৬৫টি এবং ৬ আগস্ট ৭০টি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের কাছে পরিষদের প্রতিবেদনটির একটি কপি রয়েছে।

পরিষদের অভিযোগ ছাড়াও পুলিশ ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ১৩৪টি অভিযোগ পেয়েছে। এসব অভিযোগে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে সাড়া দিয়েছে। সব মিলিয়ে ৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে মোট ১১৫টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং অন্তত ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রেস উইং জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশজুড়ে যে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

পুলিশ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ এলে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি ফোকাল পয়েন্ট সেই অভিযোগ পরিচালনা করছে। প্রতিটি অভিযোগ সমাধানে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।