বিরল বন্য ভালুকের সন্ধান, সতর্কতা জারি

ডিপি ডেস্ক :

 

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতির ভালুকের দেখা মিলেছে। বিরল এই প্রজাতির বন্য ভালুক অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হওয়ায় বনের ভেতরে পর্যটকসহ জনসাধারণের প্রবেশে  সতর্কতা জারি করেছে বন বিভাগ।

 

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রঘুনন্দন পাহাড়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। ২৪৩ হেক্টর আয়তনের এ উদ্যানের পাশ ঘেঁষে আছে ৯টি চা-বাগান।উদ্যানের ভেতরে টিপরা পাড়ায় পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর ২৪টি পরিবারের বসবাস।

 

১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু ও ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির পাখি আছে উদ্যানে। বাংলাদেশের সংরক্ষিত এ বনাঞ্চল পাখিদের অভয়াশ্রম। বনের ভেতরে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণও আছে।

 

সম্প্রতি হারিস দেব বর্মা উদ্যানের গভীর অরণ্যে ছবি তুলতে গিয়ে বিরল প্রজাতির বন্য ভালুকের (এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতি) সন্ধান পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রাণীটির ছবি তোলেন।

 

হারিস দেব বর্মা বলেন, ‘আমি বিরল প্রজাতির ভালুকটি দেখে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে এই বনে ওদের বসবাস আছে। দেখামাত্রই ছবি তুলতে দেরি করিনি।পরে সেই ছবি প্রাণী বিশেষজ্ঞদের দেখানোর পর নিশ্চিত হই যে প্রাণীটি এশিয়াটিক কালো ভালুক।’

 

বন বিভাগ সূত্র বলছে, এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের এ ভালুক বিলুপ্তপ্রায়। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছোট-বড় মিলিয়ে বনে এ প্রজাতির ১০ থেকে ১২টি ভালুক আছে।

 

এ প্রজাতির ভালুকের কালো পশম, একটি হালকা বাদামি মুখ ও বুকে একটি স্বতন্ত্র সাদা বা ক্রিমি প্যাঁচ থাকে, যা কখনো কখনো ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়।

প্রাপ্তবয়স্ক ভালুকের ওজন ৬০ থেকে ২০০ কেজি। গড় ওজন ১৩৫ কেজি। সর্বভুক এ প্রাণী পোকামাকড়, বিটল লার্ভা, অমেরুদণ্ডী প্রাণী, মৌমাছি, ঘাস, ছাল, শিকড়, কন্দ, ফল ইত্যাদি খায়।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের ভিলেজার হারিস দেব বর্মার মাধ্যমে আমরা প্রথম সাতছড়িতে এ ধরনের ভালুক থাকার বিষয়টি জানতে পারি। পরে আমরা অনুসন্ধান করে সত্যতা পাই।’

তিনি বলেন, ‘এটি বিরল প্রাণী। সংরক্ষণে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশে নিরাপত্তাঝুঁকি থাকার বিষয়টি সতর্ক করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এর দ্বারা আক্রান্ত হয়নি।’

ভালুক থাকার বিষয়টি জানার পর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *