সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা হার, ২০২৫ সালে কোন স্কিমে কত পাবেন?

অনলাইন ডেস্ক :

 

২০২৫ সালে নতুনভাবে নির্ধারিত হলো সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার। এত েদিন জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে মেয়াদান্তে সর্বনিম্ন ১১.০৪ থেকে সর্বোচ্চ ১১.৭৬ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যেত। নতুন নিয়মে মুনাফা ১২ শতাংশের অধিক রাখা হয়েছে, যেখানে সর্বনিম্ন হার ১২.২৫ আর সর্বোচ্চ ১২.৫৫। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর সব সঞ্চয়পত্রে পাওয়া যাবে এই বাড়তি মুনাফা।

সঞ্চয়পত্রের স্কিমগুলোতে নতুন মুনাফার হার

জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মুনাফা প্রদানের জন্য দুটি ভিন্ন বিনিয়োগ পরিসীমা ঠিক করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরিসীমা-১ : অনূর্ধ্ব সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগ পরিসীমা-২ : সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক।

প্রথমটিতে প্রদেয় মুনাফা অপেক্ষা দ্বিতীয় ক্যাটাগরির মুনাফার শতাংশ কম হবে। তবে এই শতাংশ আগের তুলনায় বেশি।

শুধু তা-ই নয়, মেয়াদের প্রথম বছর থেকে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত প্রতি বছরের ধার্যকৃত মুনাফার শতাংশগুলোও আগের থেকে বেশি। এই হার ৫ ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হার অনুসারে প্রতি ৬ মাস অন্তর পুনর্নির্ধারিত হবে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র 

এই স্কিমে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই নগদায়নের ক্ষেত্রে বছরান্তে মুনাফা শুরু হবে ১০.২৩ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে ১০.৭৫, ৩য় বছরে ১১.৩১, এবং ৪র্থ বছরে ১১.৯১ শতাংশ।

৫ বছর মেয়াদপূর্তির পর মুনাফা দাড়াবে ১২.৫৫ শতাংশ, যা এখন থেকে প্রযোজ্য রিটার্নগুলোর মধ্যে সর্বাধিক। 

সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগে ১ম বছরে মুনাফা থাকছে ১০.১১। এটি বছরান্তের হিসেবে নতুন ব্যবস্থার সবচেয়ে কম পরিমাণ রিটার্ন। উপরন্তু, ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছর শেষে মেয়াদ উত্তীর্ণকালে এই শতাংশটি পৌঁছবে ১২.৩৭-এ।

পরিবার সঞ্চয়পত্র

সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে পাবেন সাড়ে ১২ শতাংশ। মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই স্কিম নগদায়ন করলে বছর শেষে রিটার্ন শুরু ১০.২০ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে নগদায়নের ক্ষেত্রে লাভের হার দেওয়া হবে ১০.৭২, ৩য় বছরে ১১.২৮ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৮৭ শতাংশ।

বিনিয়োগ সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক হলে ১ম বছরের মুনাফা ১০.১১ শতাংশ, যা ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে হবে ১১.৭৫ শতাংশ। সর্বপরি, ৫ বছর কিস্তি পূরণ করলে লাভের হার ১২.৩৭ শতাংশ। 

বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র

সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে লাভের পরিমাণ ১২.৪০ শতাংশ। মেয়াদ পূর্ণ না করলে ১ম বছরে ১০.১৩, ২য় বছরে ১০.৬৪, ৩য় বছরে ১১.১৯ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৮ শতাংশ।

যারা সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তাদের ১ম বছরে নগদায়নে মুনাফা পড়বে ১০.১১ শতাংশ। ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছরের আগে স্কিম না ভাঙলে লাভের হার দাড়াবে ১২.৩৭ শতাংশে।

৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র

এই সঞ্চয় স্কিমে যারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করবেন, তাদের মেয়াদ শেষে রিটার্ন আসবে ১২.৩০ শতাংশ। অন্যথায় মেয়াদ পূর্ণ করা না হলে ৩ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে ১ম বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে ১১.০৪ এবং ২য় বছরে ১১.৬৫ শতাংশ।

অপরদিকে, সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের পর ১ম বছরের পরেই বিনিয়োগ করা টাকা তোলার ক্ষেত্রে মুনাফা মিলবে ১১ শতাংশ। ২য় বছরে পাওয়া যাবে ১১.৬১ আর মেয়াদপূর্তি করতে পারলে লাভের অংশ হবে ১২.২৫ শতাংশ।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদি হিসাব

উপরোক্ত প্রধান চার স্কিমের বাইরে ডাকঘর সঞ্চয় হিসাবে উভয় বিনিয়োগ ক্যাটাগরি থেকে প্রাপ্ত রিটার্নের হার হবে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের অনুরূপ।

সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার হার কাদের জন্য প্রযোজ্য

যেহেতু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রেই উল্লেখযোগ্য হারে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সকল শ্রেণির গ্রাহকরাই এর আওতাভূক্ত। সুতরাং জানুয়ারি ২০২৫ থেকে যারা সঞ্চয়পত্র কিনবে তারা নতুন এই বর্ধিত মুনাফার সুবিধা পাবেন।   

পরিশিষ্ট

২০২৫-এ নতুন নিয়মে প্রণীত সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের প্রতিটি ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন এসেছে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কমপক্ষে ১২.৩০ শতাংশ মুনাফা রয়েছে ৩ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র দুটোতে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সর্বোচ্চ ১২.৫৫ শতাংশ হারে রিটার্নের সুযোগ থাকছে পেনশনার ব্যবস্থায়। সাড়ে ৭ লক্ষের অধিক টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ বছর মেয়াদি সবগুলো স্কিমেই সর্বাধিক রিটার্ন ১২.৩৭ শতাংশ। আর ৩ বছর মেয়াদি ব্যবস্থাগুলোতে থাকছে ১২.২৫ শতাংশ, যা এই পরিবর্তিত সঞ্চয় প্রক্রিয়ার সর্বনিম্ন মাত্রার মুনাফা।ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *