কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

কুষ্টিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গিয়ে নুরজাহান খাতুন (৬৫) নামে এক নারীর ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছে এক প্রতারক। প্রকাশ্য দিনে দুপুরে ব্যাংকের ভেতরেই এ ঘটনা ঘটে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের বড়বাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখায় টাকা জমা দিতে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা নারী।

ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন শহরের মিলপাড়া চাউলের বর্ডার এলাকার মৃত ককিল উদ্দিন শেখের স্ত্রী। তিনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করেন।

ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার সকালের দিকে নুরজাহান খাতুন ও তার মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাবানা খাতুন ব্যাংকের ভেতরে গেছেন একটি ব্যাংক হিসাব খুলতে। ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েকটি টিপসই নেন তাদের। দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকের গ্রাহক সেজে আসা এক প্রতারক নুরজাহানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জানান, তিনি টাকা জমা দিয়ে দেবেন। একপর্যায়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি। কালো রঙের সোয়েটার, নীল প্যান্ট ও কালো জুতা পরা ছিল ওই প্রতারক।

ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন বলেন, “স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই মা-মেয়ে একসাথেই থাকি শহরের মিলপাড়া চাউলের বর্ডার এলাকায়। ভিক্ষাবৃত্তি করেই এই টাকাগুলো জমিয়েছিলাম। ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকাগুলো রাখার জন্যই মা-মেয়ে সকালে ব্যাংকে আসি। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েকটি টিপসই নেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতারক টাকা জমা দিয়ে দেবেন বলে আমার কাছ থেকে ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।” একথা বলার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “শেষ সম্বলটাও নিয়ে গেল প্রতারক। আমি পুলিশের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, ভিক্ষাবৃত্তি করে আমার জমানো টাকাগুলো যেন উদ্ধার করে দেন। এই টাকাগুলোই আমাদের শেষ সম্বল।”

তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে টাকাগুলো উদ্ধারে সহযোগিতা চান।

অগ্রণী ব্যাংক কুষ্টিয়ার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানাই। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, ভুক্তভোগী নুরজাহান খাতুন থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্তসহ ওই প্রতারককে ধরতে পুলিশ কাজ করছে।