ন্যাশনাল ডেস্ক : চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির দামে অস্বাভাবিক প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে একটি সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মাস্কের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। যার সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১০০ থেকে ২০০ টাকা। এভাবে ১২ ধরনের সরঞ্জামের বাজার দরের সঙ্গে একটি তুলনামূলক ছক তৈরি করে সম্প্রতি প্রস্তাবটি ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ প্রকল্পের আওতায় কেনার জন্য প্রস্তাবিত সব যন্ত্রপাতি বা চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যালোচনা করলে দামের অসামঞ্জস্য আরও অনেক বেশি হবে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা প্রস্তাবটি ফেরত পেয়েছি। মন্ত্রণালয়ের যারা এগুলো নিয়ে কাজ করেছেন, তারা সঠিকভাবে তা করেননি। এ ধরনের ব্যয় প্রাক্কলন চুরি করার ক্ষেত্র তৈরি করে।
কি করে এ ধরনের প্রকল্প প্রস্তাব আমাদের মাঝ থেকে বেরিয়ে যায়? বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির সময় বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যয় নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি হচ্ছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি এত অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তারা কিভাবে এ ধরনের প্রাক্কলন করেন? তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মাস্ক ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্য যেসব সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাব করেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- নির্ধারিত সাইজের একটি রেক্সিনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা (সম্ভাব্য বাজার মূল্য ৩০০-৫০০ টাকা), স্টেরাইল হ্যান্ড গ্লোভস ৩৫ হাজার টাকা (২০-৫০ টাকা), কটন তাওয়েল ৫ হাজার ৮৮০ টাকা (২৫০-১০০০ টাকা), ৫ এমএল সাইজের টেস্টটিউব-গ্লাস মেডের মূল্য ৫৬ হাজার টাকা (১৫-৫০ টাকা), থ্রিপিন ফ্লাট ও রাউন্ড প্লাগযুক্ত মাল্টিপ্লাগ উইথ এক্সটেনশন কড ৬,৩০০ টাকা (২৫০-৫০০টাকা), রাবার ক্লথ ১০ হাজার টাকা (৫০০-৭০০ টাকা), হোয়াইট গাউন ৪৯ হাজার টাকা (১-২ হাজার টাকা), ডিসপোজাল সু কভার সাড়ে ১৭ হাজার টাকা (২০-৫০ টাকা), বালিশের দাম ২৭ হাজার ৭২০ (৭৫০-২০০০ টাকা) এবং বালিশের কভার ২৮ হাজার টাকা (৫০০-১৫০০ টাকা)।
অবৈধ সম্পদ আহরণের অসৎ উদ্দেশ্যে যারা এ রকম কর্মকাণ্ড করছেন, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, এ ধরনের অসামঞ্জস্য ব্যয় ধরার উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কোনো কোনো অংশের সরকারি খাতের অর্থে নিজেদের সম্পদের বিকাশ ঘটানো।
সূত্র: যুগান্তর