কুষ্টিয়ার সীমান্তে হঠাৎ বন্যা নারী ও শিশুদের হাহাকার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির গতি আবারও বেড়েছে। দু’দিন পানি বৃদ্ধির গতি কিছুটা কম থাকলেও শনিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত সে গতি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী ইউনিয়নের ১৮টি গ্রাম এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ১৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে সব মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাঁকি দু’টি গ্রামও আংশিক বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যাকবলিত পানিবন্দী মানুষের দূর্ভোগ-দূর্দশা বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে দুই ইউনিয়নের প্রায় সব মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় থাকলেও তাদের সেভাবে ত্রান সহায়তা বা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি।
শনিবার দিনভর কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ্, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন ও দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন বন্যা কবলিত রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিকভাবে ২০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল তবে সংসদ সদস্য আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ স্থানীয় প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানদের বন্যার্তদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ থেকে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার সরবরাহের কথা বলেছেন তিনি। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, গতকাল থেকে আবারও চরম হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে সব এলাকায় পানি প্রবেশ করেনি সেসব এলাকাতেও পানি ঢুকে পড়েছে। বলতে গেলে এখন পুরো রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ বলেন, পুরো চিলমারী ইউনিয়ন এখন পানিতে টইটুম্বুর। চিলমারী ইউনিয়নবাসী এখন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশ মানুষের বাড়ি ও ঘর পানিতে থৈ থৈ করছে।
বন্যায় অর্থকরী ফসলহানির পর বন্যায় তলিয়ে যাওয়া বাড়ি ঘরের মানুষ চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছে। তিনি সরকারের কাছে সবধরণের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৭ গ্রামের ১০হাজারেরও বেশী পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় থাকলেও তা এখন দ্বিগুনে রূপান্তর হয়েছে। ৫ হাজারেরও বেশী পরিবারের বাড়ি-ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে তারা জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছেন। উজানের নেমে আসা পানিতে আকষ্মিক বন্যায় চরাঞ্চলের প্রায় ১৫’শ হেক্টর জমির মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। দেরীতে বন্যার হওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ার পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ দূর্দশার মধ্যে রয়েছেন বন্যাকবলিত অসহায় মানুষ। বিশেষ করে শিশু খাদ্য এবং পানীয় জলের তীব্র সংকট। নারীদের এক ভেজা কাপড়ে থাকতে যেয়ে তারাা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। নারী ও শিশুদের হাহাকারে বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। বানবাসিদের সাহায্যে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান ভূক্তভোগীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *