বেনাপোল চেকপোষ্টে তল্লাশির নামে হয়রানি, বিরক্তি যাত্রীরা

ইকরামুল ইসলাম (বেনাপোল) :  বেনাপোল চেকপোস্টে তল্লাশির নামে চলছে হয়রানি। এতে বিরক্ত যাত্রীরা। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের পরও যাত্রীদের দুদফায় পড়তে হয় বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) টেবিল চেকপোস্টের সামনে। যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশির আইন থাকলেও, হাতড়ানো হয় প্রতিটি ব্যাগ। কখনও ফেলে রাখা হয় মেঝেতে।
বেনাপোলের বিজিবি চেকপোস্টে মেঝের চারিদিকে ব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে চেকিং নিত্যদিনের ঘটনা। ব্যাগ-লাগেজ মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওলট পালট করে চলে তল্লাশি।
ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে দেশে আসা যাত্রীরা ইমিগ্রেশন কাস্টমসের পর, বন্দর থেকে বেরিয়েই আবার বিজিবির টেবিল চেকপোস্টের মুখোমুখি হয়। চলে প্রতিটি ব্যাগ, লাগেজ হাতিয়ে তল্লাশি। তাদের ইউনিফর্মে নেই কোন নেমপ্লেট। আইনি সুরক্ষা চাইলে ক্যাম্পে নেয়ার প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয়া হয়।
এখানেই শেষ নয়, তিন কিলোমিটার সামনেই একই বাহিনীর চেকপোস্ট। আবারও প্রতিটি লাগেজ হাতড়ে তল্লাশি, আর প্রশ্নবান।
ভারত থেকে আসা যাত্রীদের ভাষায় এই তল্লাশির ধরন অসম্মানজনক। যাত্রীদের কথায় যাওয়ার আগে একটু আইনে চোখ বোলানো যাক।
কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর সেকশন ৬ এর বলে, বিজিবিকে আটটি ধারার ক্ষমতা দেয়া হয় ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর। যদিও এসব চেকপোস্ট চলছিলো তার আগে থেকেই। আইনের ১৫৮ ধারা অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশির কথা বলা হলেও, বিজিবির সদস্যরা সবার লাগেজেই যুক্তিসংগত কারণ খুঁজে পান। আবার ১৫৯ ধারায় গেজেটেড কাস্টমস কর্মকর্তা অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তল্লাশির কথা বললেও, যাত্রীকে সেই সুরক্ষা দেন না দায়িত্বরত সদস্যরা।
ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারত থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার যাত্রীর যাতায়াত বেনাপোলে। যাদের মতে একই সংস্থার দুইদফা এমন তল্লাশি রীতিমতো মানহানীকর।
এক যাত্রী বলেন, ‘একই সংস্থার দুইবার তল্লাশির কোন যৌক্তিকতা নাই।’
আরেক যাত্রী বলেন, ‘ওইখান থেকে বের হবার পর অনেকের কাছে অবৈধ জিনিস থাকতে পারে। কিন্তু চেকিং পদ্দতিটা আরও উন্নত করা দরকার। তাদের আচরণ ভালো করা দরকার।’
কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেছেন, চলতি তল্লাশির ধরন যাত্রীসেবার অন্তরায়। ক্ষোভ আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও।
তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরে কেউ যদি অভিযোগ করতে চায় তাহলের তারও একটা নীতিমালা থাকা দরকার।’
ইন্দো বাংলা চেম্বার সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘এটা আর কতোদিন? আমরা বিরক্ত। নোম্যন্সল্যান্ডের তিন জায়গায় চেকিং। এটার কোন যুক্তি নাই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে যে কোন এজেন্সি এ কাজ করতে পারে।’
তবে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, সমস্যা সমাধানে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। সে কারণেই আমরা লাগেজ স্ক্যানার বসিয়েছি। এছাড়াও আমরা চেকপোষ্টে সন্দেহভাজন যেসব ট্রাক বা বাস থাকবে সেগুলোকে আমরা চেক করব। এছাড়া অন্যসব গাড়ি আমরা চেক করব না ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *