বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম বীর ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)

একসময় গোটা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মুসলিম বীর যোদ্ধারা। তাঁদের তরবারির ঝলকানি দেখে কম্পিত হয়ে উঠত কাফিরদের অন্তরাত্মা। মুহূর্তেই শক্তিশালী অমুসলিম রাষ্ট্র পদানত হয়ে যেত তাঁদের কাছে। এমনই একজন বীর যোদ্ধার বীরগাথা নিয়ে লিখেছেন মোস্তফা কামাল গাজী।

হজরত আবু বকর (রা.) যতটা পরিচিত ছিলেন তাঁর কোমল ও নম্র ব্যবহারের জন্য, ঠিক ততটাই বজ্রকঠিন ব্যক্তিত্বের কারণে লোকেরা ভয় পেত হজরত ওমর (রা.)-কে। ইসলামের প্রথম যুগেই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হজরত আবু বকর (রা.)-এর মৃত্যুর পর তিনি মুসলিম বিশ্বের খলিফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্ব গুণে ইসলাম অনেক দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। একে একে বিজয় হয় দিগ্বিদিক রাজ্যগুলো। হজরত আবু বকর (রা.) যে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য আক্রমণ শুরু করে দিয়ে গিয়েছিলেন, হজরত ওমর (রা.) সেটা শেষ করেন। ৬৩৩ সালে পারস্য বিজয়ের প্রাথমিক ধাপ শুরু করেন তিনি। এই যুদ্ধ চলে ৬৫২ সাল পর্যন্ত। ধীরে ধীরে মেসোপটেমিয়ায় দুটি আক্রমণ করা হয় ৬৩৩ ও ৬৩৬ সালে। এরপর ৬৪২ সালে নাহাভান্দর যুদ্ধ হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে পারস্য বিজয় শুরু হয়। প্রতাপশালী সাসানীয় সাম্রাজ্যের হাত থেকে পারস্য কেড়ে নিতে থাকে মুসলিম বাহিনী। প্রথমে ফার্স দখল করে নেওয়া হয়, এরপর ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পূর্ব পারস্য, সাকাস্তান, আজারবাইজান, আরমেনিয়া ও খোরাসান জয়ের মাধ্যমে পারস্য পুরোপুরি মুসলিমদের অধিকারে চলে আসে। ৬৩৬ সালে বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াস মুসলিমদের কাছে হারানো জায়গাগুলো উদ্ধার করতে আক্রমণ চালান, কিন্তু ইয়ারমুক যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেন তিনি। এভাবে বীরত্বের সঙ্গে রাজ্য জয় করে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী শাসন করেন হজরত ওমর (রা.)।

(তথ্য সূত্র : তাবাকাতুল কুবরা, সিরাতে ইবনে হিশাম, তাবাকাতে ইবনে সাদ, ৩য়)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *