বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ,বাড়িতে চলছে শোকের মাতম !

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার ঘটনায় তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কে।
পরিবারের সদস্যরা বুঝে উঠতে পারছেন না, এত মেধাবী, শান্ত ছেলেটিকে কারা হত্যা করল। পরিবারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, ফাহাদের কোনো শত্রু ছিল না। তাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক। তাদের সন্তানকে কেন এভাবে জীবন দিতে হলো, বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।

এর আগে, রোববার (৬ অক্টোবর) মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনায় রাসেল ও ফুয়াদ নামে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। সকালেই তাদের আটক করা হয়। আটক রাসেল ও ফুয়াদ বুয়েটেরই শিক্ষার্থী।

সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবরার লেখালেখি করতেন। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহত ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) বিভাগের লেভেল-২ এর টার্ম ১-এর ছাত্র ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।

এদিকে পুলিশ ও তার পরিবার বলছে, ফাহাদের গায়ে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। শরীরের পেছনে, বাম হাতে ও কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত আঘাতের কালো দাগ ছিল।

নিহত ফাহাদের মামাতো ভাই জহিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ফাহাদের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না। সে কুষ্টিয়ায় গিয়েছিল। গতকালকেই বিকালে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় এসে হলে ওঠে। তারপর মধ্যরাতে খবর পাই ভাই মারা গেছে।

এদিকে হল প্রভোস্ট মো. জাফর ইকবাল খান জানান, রাত পৌনে ৩টার দিকে খবর পাই এক শিক্ষার্থী হলের সামনে পড়ে আছে। কেন সে বাইরে গিয়েছিল, কী হয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি। পরে বুয়েটের চিকিৎসক দিয়ে তাকে পরীক্ষা করা হয়। ওই চিকিৎসক জানান তিনি বেঁচে নেই। পরে পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

চকবাজার থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, রাত পৌনে ৩টার দিকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমাদের ফোন করে বিষয়টি জানায়। পরে আমরা গিয়ে শেরেবাংলা হলের বাইরে নিচতলা থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসি।

নিহতের শরীরে আঘাত কোনো অস্ত্রের নয়। কোনো কিছু দিয়ে বাড়ি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সহপাঠীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *