Site icon দেশের পত্রিকা – দেশের পত্রিকা দেশের কথা বলে

দুবলার চরে রাস উৎসবের আড়ালে হরিণ শিকার, আটক ৪২ জন

ডিপি ডেস্ক :

 

দুবলার চরের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব ঘিরে হরিণ নিধনে মেতে উঠেছিল শিকারি চক্র। বন বিভাগের পৃথক তিনটি অভিযানে রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক হয়েছে ৪২ জন হরিণ শিকারি। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরা ফাঁদ ও ট্রলারসহ বিভিন্ন মালপত্র।  আলোরকোলের ডিমের চর এলাকায় অভিযান চলাকালে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) রানা দেবের ওপর হামলা চালায় একদল শিকারি।

এতে তিনি গুরুতর আহন হন। এ ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। এই মামলায় রাফি হাসান (২৬), শাহিদ মল্লিক (২৮) ও আলামিন আকুঞ্জি (২৭) নামে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বন বিভাগ জানায়, পুণ্যার্থীর ছদ্মবেশে বনে প্রবেশ করে এই দুষ্কৃতকারীরা।তারা বন বিভাগ থেকে রাস উৎসবের পুণ্যার্থী হিসেবে পাস (অনুমতিপত্র) সংগ্রহ করে হরিণ শিকারের প্রস্তুতি নিয়েছিল। এসব শিকারি খুবই হিংস্র এবং বেপরোয়া। তারা রাস উৎসবের আড়ালে হরিণ শিকারের বড় ধরনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বনে প্রবেশ করে। তবে বন বিভাগের কঠোর নজরদারি ও অভিযানে তা অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি বন বিভাগের। গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তার (এসিএফ) রানা দেবের নেতৃত্বে আলোরকোলের ডিমের চর থেকে এক শিকারিকে আটক করেন বনরক্ষীরা। এ সময় শিকারি দলের অন্য সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে এসিএফের ওপর হামলা চালায়। পরে অভিযান চালিয়ে ১৮টি হরিণ ধরা ফাঁদসহ তিনজনকে আটক করা হয়। একই দিন আলোরকোলের কুতুবের খাল এবং কোলের খাল সংলগ্ন বনের ভেতরে শিকারিদের পেতে রাখা প্রায় ৪ হাজার ফুট হরিণ ধরার মালা ফাঁদ উদ্ধার করা হয়। দিনভর অভিযানে আটক করা হয় আরো ৩২ জন শিকারিকে।
 এর আগে গত শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে রেঞ্জের কোকিলমনি হোন্দলে বনাঞ্চল থেকে হরিণ শিকারের প্রস্তুতিকালে ৭ শিকারিকে আটক করেন স্মার্ট টিমের সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে বন বিভাগের পতাকাবাহী ২টি ট্রলার, ১০০ ফুট হাটা ফাঁদসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, দুবলার চরের রাস পূজায় এক শ্রেণির লোক হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যেই আসে। এই শিকারিদের বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল। তাদের মিশন সফল হলে শতাধিক হরিণ মারা পড়ত। বন বিভাগের কঠোর নজরদারি এবং অভিযানে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। শিকারি চক্র অত্যন্ত দুর্ধর্ষ এবং সংঘবদ্ধ। অভিযান চলাকালে তারা শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করেছে।পৃথক তিনটি অভিযানে ৪২ জনকে আটক কারা হয়েছে। আটক শিকারিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো করা হয়েছে। এদের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল, মোংলা এবং খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এসব অভিযানে বন বিভাগের পতাকাবাহী দুটি ট্রলার, প্রায় সাড়ে চার হাজার ফুট নাইলনের সুতার তৈরি হরিণ ধরা ফাঁদসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার হয়েছে। সুন্দরবনে হরিণ শিকার রোধে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
Exit mobile version