সম্পাদকীয় :
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাগজের টাকার উপরে লেখা “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে”স্রষ্টার পরে ক্ষমতা, টাকার “টাকা কথা বলে” টাকা নিয়ে পৃথিবীতে বিভিন্ন ইতিহাস রয়েছে “পৃথিবীর সমস্ত অন্যায় অপকর্ম টাকার কারণে হয়ে থাকে” টাকাতেই আবেগ, টাকাতে মানবতা, টাকাতে মমতা, টাকাতে ঘৃণা, টাকাতেই অনুভূতি, টাকাতেই ভালোবাসা, টাকাতেই সেবা, টাকাতে শিক্ষা, টাকাতেই চিকিৎসা, টাকাতেই জ্ঞান, টাকাতেই খাদ্য, টাকাতেই সম্মান, টাকাতেই ইজ্জত, টাকাতেই ধর্ম, টাকাতেই বিচার ইত্যাদি।
সেই দিন হঠাৎ ঔষুধের দোকানে আমি ঔষুধ কিনতে গিয়েছি। আমি ১০০০ টাকার নোট দিতেই দোকানদার আমাকে ৩৪০ টাকা ফেরত দিল, যেহেতু আমার ঔষুধের বিল হয়েছে ৬৬০ টাকা। দোকানদার যে ৩৪০ টাকা আমাকে ফেরৎ দিল তার মধ্যে একটা ১০০ টাকার নোট ছিল, যেটা বোঝা যাচ্ছে, কোন মানুষ হাতের মুঠোয় বেশ কিছুক্ষণ শক্ত করে ধরে ছিল, আমি টাকাটার ভাঁজ খুলতে হঠাৎ মনে হলো ! আমি যেখান থেকে ঔষুধ কিনেছি ওই দোকান হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে, আমি সেখানে হর-হামেশাই যাই ঔষুধ কিনতে, প্রায় সবসময়ই চোখে পড়ে হাসপাতাল থেকে রোগীর স্বজনেরা দৌড়ে এসে ঔষুধ কেনেন, তখন মনে হল এই ধরনের কোন এক রোগীর স্বজনের হাতের টাকা।
তো এখান থেকেই টাকার বিচারের কথা মাথায় আসলো !
যখন কোন মানুষের পরিবারে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন সেই রোগীকে হাসপাতালে আনতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন টাকার। বাংলাদেশে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ২৭.৯৩% থেকে ২১.২% পর্যন্ত হতে পারে। পিপিআরসি (PPRC)-এর একটি সমীক্ষা অনুসারে, দারিদ্র্যের হার প্রায় ২৮% বা ২৭.৯৩%। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংক এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS)-এর হিসাব অনুযায়ী এই হার ২১.২%। তবে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালে দারিদ্র্যের হার ১৫.৬% এবং চরম দারিদ্র্য ৭.৪%-এ নেমে আসার লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
এই সকল পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ হয়ে যায় তখন বাড়িতে যেখানেই, যেভাবেই টাকা থাকে ওই ভাবেই হাতের মুঠোয় নিয়ে ছুটে আসেন হাসপাতালে অথবা ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য। যখন ওষুধের প্রয়োজন হয় ডাক্তার প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দিলে, স্বজনেরা ছুটে আসেন হাসপাতালের সামনে অবস্থানরত বিভিন্ন ফার্মেসিতে। আবার যখন টাকার জন্য ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি, খুন, বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালিত হয় সেই টাকাগুলো যায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে, আত্মসাৎ, কালোবাজারি, ঘুষ, অসাধু ব্যবসায়ীদের টাকা যায় দেশের বাইরে। হালাল উপার্জনের টাকা পাওয়া যায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে। সমাজের ডোম,মুচি,মেথর থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত সকলেই এই টাকার ভুক্তভোগী। পৃথিবীর সমস্ত ভালো-খারাপ কাজের সাক্ষী এই টাকা।
তাহলে কি টাকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সকল কার্য পরিচালনার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি পাওয়া যাবে ?

