অনলাইন ডেস্ক : যশোরের শার্শা উপজেলায় দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র কমিটি গঠনের প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করে তৃনমুল পর্যায় হতাশ সৃষ্টি হয়েছে। এবং নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিীয়া। দলের তৃনমুল নেতা-কর্মিরা আহবায়ক কমিটিতে কে আাসছে, কে আসতে পারে বা আশা প্রয়োজন তা নিয়ে নানা আলোচনা পর্যালোচনায় মেতে উঠেছে।
প্রসঙ্গত: শার্শা উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান ৭১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয় ২০০৯ সালের ১৯ সভেম্বর। এই কমিটির ১১জন সদস্য ইতি মধ্যেই মারা গেছেন এবং এ কমিটিতে অনেক সদস্য নিষ্কৃীয় রয়েছেন। অনেকে বর্তমান নেতৃতের সাথে কোন কর্মকান্ডে নেই।
গত ১০ বছর আগে গঠিত এ কমিটিতে যারা মারা গেছেন তারা হলেন সহ-সভাপতি ২ জন মোশারফ হোসেন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবু সিদ্দিক মন্ডল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ২জন মহরম আলী, ডাঃ রেজাউল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মান্নান, অর্থ-সম্পাদক বজলুর রহমান, বৃক্ষ রোপন বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ হোসেন, তাঁত শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মশিয়ার রহমান, সদস্য ৩জন বেলায়েত হোসেন, ইসমাইল হোসেন ও আমজাদ আলী।
কমিটি গঠনে শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৭২ টি গ্রামে বিএনপি সমর্থক সকল নেতা-কর্মিদের মধ্যে খুশির আমেজ আসলেও শার্শা থানা বিএনপি একাধিক বার দিন পরিবর্তনের ফলে হতাশ হয়ে পড়েছে। তৃনমুলে চায়ের দোকানে, বাজারে সবার মুখে বিএনপির কমিটি গঠনের কথা নিয়ে নানান গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কমিটিতে কারা আসছে, আসতে পারে বা আশা প্রয়োজন তা নিয়ে নানা আলোচনা পর্যালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে নেতা কর্মিরা। তৃন মুলের সাধারন কর্মিরা মনে করেন গনতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে আহবায়ক কমিটি গঠন হোক। মৌখিক ভাবে মুখ চিনে কমিটি না হোক। কর্মিদের ইচ্ছা যে নেতা দায়িত্ব নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে রাজ পথে নামবে। যে নেতা দলীয় কর্মসুচি পালন করবে। যে নেতা আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করবে না। যে নেতা দিনে এক দল ও রাতে আর এক দল করবে না।
যে নেতা তৃন মুল বিএনপি কর্মিদের মুল্যায়ন করবে। যে নেতা দলের মধ্যে আত্মীয় করন, পদ বেচা কেনা করবে না। যে নেতা পদ নিয়ে উপজেলার বাহিরে অবস্থান করবে না। যে নেতা বিপদে, আপদে, হামলা, মামলায় দলের সাধারন নেতা কর্মিদের পাশে থাকবে এমন নেতা কে নির্বাচন করতে হবে।
তৃনমুল কর্মিদের দাবি শার্শা উপজেলা বিএনপি’র, গনতান্ত্রীক ভাবে দক্ষ, যোগ্য, সাংগঠনিক নেতা কর্মিদের কমিটিতে আনা হোক। বিএনপি’র যারা দীর্ঘ দিন ধরে দলের সাথে বা কোন কর্মকান্ডে নেই, যারা রাতে দিনে ভোল পাল্টায় তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য জেলা বিএনপি’র সকল নেতাদের প্রতি আহবান জানান কর্মিরা। কর্মিদের অভিযোগ শার্শা বিএনপিতে ২জন ব্যাক্তি তাদের পদ ধরে রেখেছে। তাদের নেতৃত্বে কোন কর্মসুচি নেই। স্থানীয় নেতা-কর্মিরা অভিযোগ কওে বলেন, বর্তমান শার্শা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক গত ১০ বছরের মধ্যে শার্শা যুবদল বা ছাত্রদল বা মহিলাদল বা কৃষক দল বা সেচ্ছা সেবক দল বা কোন অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি গঠন করতে পারেনি। শার্শা বিএনপি’র বর্তমান নেতাদের অনেক স্বজনেরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেক নেতাদের বিরুদ্ধে গত নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে শার্শা বিএনপির এক সিনিয়র নেতা (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) জানান, বর্তমান বিএনপিতে যে দু’জন আছেন তারা কমিটি গঠন নিয়ে তাল বাহানা করছে। ভোটের মাধ্যমে তারা সমর্থন পাবেনা বলে জানান তিনি।
একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, শার্শা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে আহবায়ক পদে দুটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। আহবায়ক পদে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শার্শা আসনের ধানের শীর্ষের মনোনীত প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি ও শার্শা বিএনপির সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, যশোর জেলা বিএনপি’র আহবায়ীকা অধ্যাপক নার্গিস বেগম ও সদস্য সচিক এ্যড সাবেরুল হক সাবুর নির্দেশনায় আগামী সপ্তাহে ১৯ অক্টোবর শার্শা উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠন হবে বলে জানান। তিনি জানান সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।