Site icon দেশের পত্রিকা – দেশের পত্রিকা দেশের কথা বলে

কুষ্টিয়ার মাটিতে লালন শাহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবেঃ এমপি হানিফ

জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লালন একাডেমি চত্বরে, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৯তম তিরোধান দিবস অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা ও আলোচনা সভা সহ সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায়
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জননেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। এসময় হানিফ এমপি বলেন, লালনের গানের অমীয় বাণী, লালনের চিন্তা-দর্শন ও উপলব্ধি আজকের সময়ের জন্য মানুষকে মানবিক করার ক্ষেত্রে এবং আলোকিত পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য অনিবার্য। তিনি বলেন, বঙ্গকণ্যা, আমাদের আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নত সমৃদ্ধে এগিয়ে যাচ্ছে। এবার সারা দেশে বাউল দের আখড়া বাড়ি সংরক্ষনের জন্য সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে। হানিফ এমপি বলেন, ধর্ম যার উৎসব সবার। তিনি আরো বলেন, কুষ্টিয়ার মাটিতেই লালন শাহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন। প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ আজাদ জাহান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন, কুষ্টিয়া-১ আসনের সাংসদ আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ সেলিম আলতাফ জর্জ, খুলনা রেঞ্জ, ডিআইজি ড. খঃ মহি উদ্দিন পিপিএম(বার), কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত পিপিএম(বার), কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া বিজ্ঞ পিপি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী, শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি তাইজাল আলী খাঁন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নেজারত ডেপুটি কালেক্টর এ. বি. এম. আরিফুল ইসলাম। এছাড়াও অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফারুকউজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হাসান মেহেদী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন রাজু, মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. সামস তানিম মুক্তি, সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা আক্তার ডিউ সহ গণ্য মান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তিনদিনের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের সাধু ভক্তরা। দুর দুরান্ত থেকে আশা হাজার হাজার দর্শক রাত ভর লালনের গান উপভোগ করেন। বক্তারা বলেন, পৃথিবীর বুকে আবির্ভূত বিস্ময়মানব লালন ছিলেন বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী। ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ্‌, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তাঁকে মরমি সাধক এবং বাউল সম্রাট ফকিরও বলা হয়ে থাকে। একাধারে তিনি একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তীর্থকালে তিনি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গীরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেন। পরে একজন মুসলমানের দয়া ও আশ্রয়ে জীবন ফিরে পাওয়ার পর তিনি সাধক ফকির হন। লালন মুখে মুখেই গানের পদ রচনা করতেন। তাঁর মনে নতুন গান উদয় হলে তিনি শিষ্যদের ডেকে বলতেন- “পোনা মাছের ঝাঁক এসেছে”। লালন গেয়ে শোনাতেন, ফকির মানিক ও মনিরুদ্দিন শাহ সেই বাধা গান লিখে নিতেন। লালনের জীবদ্দশাতেই তাঁর গান বহুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। লালনের শিষ্যদের ধারণা তাঁর গানের সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এত বিপুলসংখ্যক গান পাওয়া যায় না। শোনা যায়, লালনের কোনো কোনো শিষ্যের মৃত্যুর পর গানের খাতা তাদের কবরে পুঁতে দেয়া হয়। এ ছাড়াও অনেক ভক্ত গানের খাতা নিয়ে গিয়ে আর ফেরত দেননি। লালন সাঁই সমাজের সকল শ্রেণি ও ধর্মের মানুষকে আমৃত্যু এক করে দেখেছেন।

Exit mobile version