ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশীথার সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী উদয়ন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬-এ দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে শতাধিক যাত্রী।
ঘটনা তদন্তে তিনটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ের ২টি ও ১টি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোর রাত ৩টা ২০ মিনিটে ঢাকাগামী ৭৪১ তূর্ণা এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রামগামী ৭২৪ উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা জানান, এ পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের বায়েক এলাকায় ৯ জন, কসবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ২ জন ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জনের মৃত্যু হয়।
মন্দবাগ স্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, তূর্ণার চালক তথা লোকো মাস্টারকে ট্রেন থামানোর জন্য আউটার ও হোম দুই স্থানেই লাল বাতি সংকেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত চালক ট্রেন দাঁড় করাননি বলেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দুটি উদ্ধার করতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার লাকসাম ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
আহত রবিউল হোসেন সুমন জানান, তূর্ণা ট্রেনের ধাক্কায় উদয়ন এক্সপ্রেসের পেছনের বগিগুলো উল্টে যায়।
কসবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হতাহতের খোঁজ পাওয়ার জন্য তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেছে উপজেলা প্রশাসন। যাত্রীদের সুবিধামতো স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, পুলিশ সার্বিকভাবে চেষ্টা করছে উদ্ধার কাজে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিতু মরিয়মকে প্রধান করে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে মরদেহ নেওয়ার সুবিধার্থে। এ ছাড়া আহতদের সেবায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধান থাকবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম জানান, উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাইড দেওয়ার জন্য অন্য লাইনে যাবার সময় তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি ধাক্কা দেয়। এতে দুটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী শফিক তুহিন জানান, তিন থেকে চার ঘণ্টা লাগবে উদ্ধার কাজ শেষ হতে।
রেলওয়ে সচিব মোফাজ্জল হোসেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে ২টি তদন্ত টিম গঠন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।