ভারতে ২ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

অনলাইন ডেস্ক : ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়াতে অপহরণের স্বীকার হয়েছেন দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। অপহরণকারীরা অপহৃতদের বাড়িতে ফোন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণও আদায় করেছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে থাকা ৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার এবং ৪৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে তাদের মারধর করেছে অপহরণকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ব্যবসার কাজে বশির মিঞা (৩৯) নামের এক কাপড়ের ব্যবসায়ী কলকাতায় যান। তার বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায়। এর আগে ব্যবসা সূত্রে সেলিম নামে এক ভারতীয়র সঙ্গে যোগাযোগ হয় বশিরের। ভারতীয় কাপড় কিনতে গত ৭ নভেম্বর ইলিয়াস নামে বাংলাদেশি বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সেলিমের সাহায্য নিতে কলকাতায় পাড়ি জমান বশির। সেখানে বন্ধুসহ অপহরণের শিকার হন তিনি।
বশির মিঞা পুলিশকে জানিয়েছেন, ইলিয়াসসহ ৭ নভেম্বর কলকাতায় সেলিমের সঙ্গে দেখা করি। সেলিম তাদের ব্যবসার প্রয়োজনে হাবড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে তিনজন খাওয়া-দাওয়াও করেন। সেখান থেকে হাবরার উদ্দেশে সেলিমের সঙ্গে ট্রেনে রওনা হন। হাবরাতে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল সেলিমের সঙ্গীরা। সেখানে পৌঁছানোর পর একটি গাড়িতে তোলা হয় আমাদের। প্রথমে ভাবছিলাম ওই আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে যাবে। কিন্তু গাড়িতে ওঠার কিছুক্ষণ পরই আমাদের চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে গাড়িতে ওঠা সেলিমের সঙ্গীরা। যখন চোখ খোলা হয় তখন দেখি অজ্ঞাত কোনো স্থানে। আমাদেরকে আটকে রেখে প্রাণে মারার হুমকি দেয় তারা। ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় তারা। অপহরণকারীদের প্রত্যেকের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এতো টাকা নেই বললে অপহরণকারীরা আমার মোবাইল থেকে আমার বাবা সিকান্দারকে ফোন করে টাকা চায়।

সূত্র আরো জানিয়েছে, ছেলেকে বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে টাকার ব্যবস্থা করেন এবং অপহরণকারীদের কাছে ৬ লাখ টাকা পৌঁছে দেন।

আর সেই টাকা পাওয়ার পর অপহরণকারীরা দালালদের হাতে দু’জনকে তুলে দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে বলে। কলকাতার পুলিশ জানায়, বশির ও ইলিয়াস ট্রেনে চড়ে কলকাতায় ফিরে আসেন। ১০ নভেম্বর তারা এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর ১১ নভেম্বর অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার পেছনে একটি বড় চক্র রয়েছে। সেই চক্রে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরাও যুক্ত রয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছি। সেই অনুযায়ী অপরাধীদের ধরার করার চেষ্টা চলছে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *