কলকাতায় রাতে নারীদের কটূক্তি, আটক ৭০

অনলাইন ডেস্ক : রাতের কলকাতায় নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে কলকাতা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ‘বিশেষ অভিযান’ চালিয়ে নারীদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ এবং কটূক্তির অভিযোগে মোট ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে মোট ৫০টি মোটরবাইক।

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছিলেন, নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রশাসন সদা তৎপর। মমতা আরো জানান, নারীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে কাজ করবে পুলিশ। আর তার ফলও মিলল হাতেনাতে। বহুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল রাতের শহরে দাপিয়ে বেড়ায় ‘বাইকার দল’। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে লাগামহীন গতিতে বাইক চালিয়ে রাজপথে ‘কার্যত’ তাণ্ডব চালায় তারা।

এছাড়াও, হায়দরাবাদ থেকে উন্নাও- কোথাও ধর্ষণ করে মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়া আবার কোথাও আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়া নির্যাতিতাকে মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ভারতজুড়ে বারবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে নারীদের সুরক্ষা।

কলকাতায় রাতের বেলা নারীদের যে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে তা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। গত মাসেই বেহালার পঞ্চসায়রে এক নারীকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। চালানো হয় শারীরিক নির্যাতন। রাতের কলকাতায় নারীদের সুরক্ষা যে প্রায় নেই, সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল এই ঘটনা।

ভারতের পুলিশ-প্রশাসনের এই ঢিলেঢালা মনোভাবের ছবিটাই বদলে যায় গত ২৭ নভেম্বর। হায়দরাবাদের অদূরে শামশাবাদের টোল প্লাজার গেটের সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও খুন করা হয় এক তরুণী পশু চিকিৎসককে। পরে হায়দরাবাদ থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয় ওই নির্যাতিতাকে।

অভিযোগের আঙুল ওঠে চার ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের সংসদ ভবন থেকে শুরু করে সারা ভারত। অভিযুক্তদের পিটিয়ে মারা বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ারও জোরালো দাবি ওঠে। ঘটনার দু’দিনের মাথায় অভিযুক্ত চার ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তাদের আদালতে তোলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), ৩৭৫ (ধর্ষণ) ও ৩৬২ (অপহরণ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আদালত অভিযুক্তদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় চেরলাপল্লির চঞ্চলগুড়া সেন্ট্রাল প্রিজনে। মামলার দ্রুত বিচারের জন্য তেলাঙ্গানা সরকার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে। এরপরেই শুক্রবার সকালে পুলিশ জানায়, এনকাউন্টারে চার জনেরই মৃত্যু হয়েছ।

এই পরিস্থিতিতেই শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজেপি সাংসদ স্মৃতি ইরানি। রাজ্যের নারীদের সুরক্ষার বিষয়ে শাসকদল নীরব কেন? সংসদে প্রশ্ন তোলেন তা নিয়েও। এর কিছু পরেই কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাতে নারী সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার কথাও বলেন। আর গত রাতে অভিযানে নেমে পড়ে কলকাতা পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *