খালেদার জামিন নিয়ে বিএনপি হাইকমান্ড এক দফার চিন্তা ১২ ডিসেম্বরের পর

অনলাইন ডেস্ক : দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন না পেলে বড় ধরনের কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপির হাইকমান্ড। এ ইস্যু সামনে রেখে দলটির হাইকমান্ড সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বলে জানা গেছে। দলটির নেতারা মনে করছেন, আগামী বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির দিন। ওই দিন আপিল বিভাগ কী ধরনের রায় দেন, এর ওপর নির্ভর করছে তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচির ধরন। এ ইস্যুতে কর্মসূচি দিতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র নেতারা।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, চেয়ারপারসনের জামিনের জন্য তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রের প্রায় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। তাঁরা কর্মসূচি চাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার জামিন যেহেতু যৌক্তিক, তাই তাঁর জামিন না হলে আন্দোলনের কর্মসূচি চাওয়াটাও নেতাকর্মীদের যৌক্তিক দাবি। আমরা তৃণমূলে বার্তা দিচ্ছি। তাদের প্রস্তুত থাকতে বলছি। খালেদা জিয়ার জামিন না হলে আমরা যেকোনো সময় কর্মসূচি ঘোষণা করব।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন গত ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে গত ২৮ নভেম্বর নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানির জন্য একই তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু ওই দিন মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে জমা না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানি না করে ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।

দলটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১২ ডিসেম্বরও খালেদা জিয়া জামিন পাবেন না বলে অধিকাংশ নেতার আশঙ্কা। তাঁরা মনে করছেন, গত ৫ ডিসেম্বর আদালত শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার পরই এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার জন্য নীতিনির্ধারকদের কাছে দলের বিভিন্ন স্তর, বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপ ছিল। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতা ও আইনজীবীরা ১২ ডিসেম্বরের আগে কোনো ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিলে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করেনি বিএনপি।

দলটির একাধিক নেতা বলছেন, ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপি ইস্যুভিত্তিক ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে দলের নেতারা হুঁশিয়ারি দেবেন। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হলে এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার জানান দেবেন, পাশাপাশি সংসদ থেকে বিএনপির এমপিদের পদত্যাগের চাপও থাকবে। এ ছাড়া কূটনীতিকদের কাছেও আশঙ্কার বিষয়টি জানাবে বিএনপি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন না হলে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করা ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। বিভিন্ন জেলার নেতাদের সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিত্সাবিহীন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। ঝুঁকি নিতেই হবে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ১২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন না হলে এক দফা আন্দোলন শুরু হবে।

কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেনসহ তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা  বলেন, খালেদা জিয়ার জামিনের আন্দোলনে এক দফা কর্মসূচির কথা আমরা কেন্দ্রকে বলেছি। তারা কর্মসূচি দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *