বাংলাদেশিদের সঙ্গে ভারত ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করছে

অনলাইন ডেস্ক : ভারতের নতুন ভিসা নীতিতে নির্ধারিত মেয়াদের বেশি সময় ভারতে থাকার সাজা হিসেবে বাংলাদেশের মুসলিম নাগরিককে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় অন্তত ২০০ গুণ বেশি জরিমানা গুনতে হচ্ছে। বছরখানেক আগে প্রথম ওই ভিসানীতি চালু করে ভারত। ভারতের ভিসা সংক্রান্ত এই নীতিমালা সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

এই জরিমানার কাঠামোকে ‘ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য’ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আসন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ বিষয়টি তোলা হবে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টম্যাচ দেখতে একদিনের সরকারি সফরে গত ২২ নভেম্বর কলকাতায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখনকার একটি ঘটনাতেই ইস্যুটি সামনে আসে।

বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলের নবীন সদস্য সাইফ হাসান তার ভিসা মেয়াদের চেয়ে বেশি সময় থেকেছিলেন ভারতে। বিষয়টি তিনি কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের কার্যালয়ে জানালে সেখান থেকে এফআরআরও’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

এফআরআরও’র নীতিমালা এফআরআরও’র (ফরেইনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসেস) ওয়েবসাইটে উল্লিখিত নিয়মানুসারে, ‘বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী’র জন্য ভিসা মেয়াদের অতিরিক্ত সময় ভারতে অবস্থান করার জরিমানা ২ বছরের বেশি সময়ের জন্য ৫০০ ভারতীয় রুপি, ৯১ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত ২০০ রুপি এবং ৯০ দিন পর্যন্ত সময়ের জন্য ১০০ রুপি।

অন্যদিকে, ভিসা মেয়াদের বেশি সময় অবস্থান করা ব্যক্তিটি যদি ‘সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী’র সদস্য না হন (সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী বলতে সেখানে মুসলিম বাদে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীদের বোঝানো হয়েছে), তখন জরিমানার অর্থ হিসাব করা হচ্ছে রুপির বদলে মার্কিন ডলারে। এক্ষেত্রে ২ বছরের বেশি সময়ের জন্য ৫০০ ডলার (৩৫ হাজার রুপি), ৯১ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত ৪০০ ডলার (২৮ হাজার রুপি) এবং ৯০ দিন পর্যন্ত সময়ের জন্য ৩০০ ডলার (২১ হাজার রুপি) জরিমানা গুনতে হচ্ছে।

সম্প্রতি একজন দরিদ্র বাংলাদেশি নারীকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডেপুটি হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা।

তিনি ভিসার মেয়াদের চেয়ে একদিন বেশি থেকেছিলেন। তাই তাকে ২১ হাজার রুপি দিতে বলা হয়েছিল। তার কাছে এত অর্থ না থাকায় আমরা টাকা তুলে তাকে ফেরত পাঠিয়েছিলাম। ধর্মের ওপর ভিত্তি করে কেন এমন বৈষম্য হবে?’ দ্য হিন্দু’কে বলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *