কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০১৯ অনুষ্ঠিত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : “সত্য-মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে” – এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ১২ ডিসেম্বর উদযাপিত হতে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০১৯।

কুষ্টিয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে সেমিনার অনুষ্ঠিত

না বুঝে যেকোন তথ্য শেয়ার করার বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে :জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন।

সত্য মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে এই প্রতিপাদ্যকে নিয়ে কুষ্টিয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে সেমিনারের আয়োজন উপলক্ষে সেমিনার এর পূর্বে একটি কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। রেলি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এরপরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) আজাদ জাহান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন, উপ পরিচালক, স্থানীয় সরকার মৃনাল কান্তি দে, পরিচালনায় ছিলেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম।
আরোও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, আরটিভি জেলা প্রতিনিধি শেখ হাসান বেলাল।

প্রধান অতিথির তার বক্তব্যে বলেন আমাদের জিডিটাল প্রযুক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের সকলকেই এ বিষয়টি নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। আজ ই্ন্টানেটের সবচেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তরুন সমাজ। তাই ফেসবুকে শেয়ার, লাইক, কমান্ড না বুঝে দিয়ে থাকে। তাই তরুন সমাজকে আগে বুঝতে হবে, তারপরে লাইক বা কমান্ড করতে হবে। গুজব শেয়ার আর লাইক দেওয়ার কারণে একটি শিশু তার মাকে হারিয়েছে। ফেসবুকে শেয়ার করার আগে চিন্তা ভাবনা করে নিতে হবে।

দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই ডিজিটাল স্পেসটাকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব আমাদের নিজেদের। বর্তমানে ফেইক নিউজ বা গুজবের সংখ্যা বাড়ছে। একটা ভালো কাজের প্রসংশা না করে উল্টো মিথ্যা ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে যা সমাজের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
তিনি আরো বলেন যে, এখন আমরা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি। এই সক্ষমতা আমাদের ১১ বছর আগে ছিল না। এই ১১ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের যত কিছু উন্নয়ন হয়েছে সেইগুলোকে টেকসই করার জন্য আমাদের এই ডিজিটাল স্পেসটাকে নিরাপদ করতে হবে। যদি আমরা না করতে পারি তাহলে আমাদের সামনে বেশ কিছু উদাহরণ আছে। ইরাক, সিরিয়া এরকম অনেক দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে শুধুমাত্র তাদের সচেতনতার অভাবে।
সেখানে কিন্তু সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে।
যদি আমরা ডিজিটাল ক্ষেত্রে সচেতন না হই, তাহলে এই যে যত কিছু আয়োজন স্টার্টআপ বাংলাদেশ এর স্টার্টআপ ফ্যাসিলিটিজ কিংবা আমাদের বাংলাদেশের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিগুলোর জন্য ইনসেনটিভ এগুলো কোন কিছুই কাজে লাগবে না। কারণ আমরা দেখেছি যে একের-পর-এক সহিংস ঘটনা কিভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন যে, আমরা খুব সহজেই গুজবে কথা বলি। গুজবকে অনেক ফানি শব্দ হিসেবে অনেকে কনসিডার করে। মিথ্যাকে আমরা ধর্মীয়ভাবে বলি মহাপাপ আর আইনগত ভাবে মিথ্যাকে বলা হয় “অপরাধ”। তাই, ফেসবুক, ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেটে যে কোন জায়গায় যদি কোন মিথ্যা অপপ্রচার দেখি তাহলে সেটাকে আমরা “মিথ্যা”-ই বলব। আর সে কারণেই আমাদের এই সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের বিষয়টা গুরুত্বসহকারে নিতে হবে।
এটাকে হালকাভাবে, গুজব কিংবা একটা হাসি ঠাট্টার বিষয় হিসেবে নয় বরং এটা একটি জঘন্য অপরাধ এবং পাপ হিসেবে যখন আমরা বিবেচনা করব তখন কিন্তু আমরা বেশি সতর্ক হতে পারব।
আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী প্রায় শতভাগ আছে। শঙ্কার জায়গাটা হল- খুব সহজেই এক ঘন্টার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোটি মানুষের কাছে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। প্রপাগান্ডা, ভুল তথ্য প্রচার, আউটসোর্সিংকে গুজব ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার, না বুঝে যেকোন তথ্য শেয়ার করার বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। অপরাধীকে প্রশ্রয় না দিয়ে এই সমস্যাগুলোর প্রতিকারে সকলকে কাজ করতে হবে।
বুঝে না বুঝে মিথ্যা সংবাদকে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্যই শেয়ার করার আগে বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় সমাজের সব ধরনের মানুষকে ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি এবং বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট এবং শেয়ার করার ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *