অনলাইন ডেস্ক : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল এখন ভারত। কয়েকটি রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এ কারণে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে পথে নামা বিক্ষোভকারীদের অস্ত্র এখন অফলাইন মেসেজিং চ্যাট অ্যাপ। হংকং এর চলমান গণআন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা এটা ব্যবহার করছেন বলে জানা গেছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বলবৎ করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ ভারত। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। এই পরিস্থিতে অশান্তির আগুন এবং বিভ্রান্তিমূলক খবর এবং তথ্য যাতে না ছড়ায় সেই কারনে রাজ্যে-রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তাতে কি। শাসকের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে, প্রতিবাদকে আগামী দিনে আরও জোড়ালো করে তুলতে প্রতিবাদীরা হাতিয়ার করে নিয়েছে অফলাইন অ্যাপ মেসেজিং পরিষেবা।
প্রধানত ব্রিজফাই এবং ফায়ার-চ্যাট এই দুই অফলাইন মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনসহ অন্য আরও এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন গত ১৪ দিনে ভারত জুড়ে তড়িৎগতিতে জনপ্রিয় হয়েছে। এই অ্যাপ্লিকেশন গুলির দ্বারা দুই বা একাধিক ব্যক্তি নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে থেকে ব্লুটুথ প্রযুক্তির দ্বারা তথ্য আদান প্রদান থেকে শুরু করে ফোন কল পর্যন্ত করতে পারেন। আর এর জন্য কোনও ইন্টারনেট বা ফোনের মোবাইল নেটওয়ার্কের প্রয়োজন নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ ইন্টেলিজেন্স সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১২ ডিসেম্বর থেকে যখন আসাম এবং মেঘালয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়, সেই দিন থেকে এই ধরনের অফলাইন অ্যাপ ডাউনলোড করার পরিমান ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতে। ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগে ব্রিজফাই প্রতিদিন যেখানে ২৫ জন ডাউনলোড করতেন, তাই ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন এক লাফে সেই সংখ্যা ১০০ শতাংশ বেড়ে হয় ২ হাজার ৬০৯ জন। শুধু আসাম বা মেঘালয়েই নয়, রাজধানী দিল্লিতেও গত কয়েকদিনে এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
ভারতে রাতারাতি একটি গণআন্দোলনের জেরে ব্রিজফাই ও ফায়ার-চ্যাট এর বাজার বেড়েছে। এ কারণে ইতোমধ্যে দুই সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের টুইটার পেজে ভারতীয় গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানিয়ে, আগামী দিনে ভারতে আরও উন্নততর পরিষেবা দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।