ভারতের নদিয়ার ফেসবুকের পরিচয়ে প্রেম শুরু, আত্মহননে শেষ

অনলাইন ডেস্ক : ভারতের নদিয়ার পুরাতন চাপড়া এলাকার বাসিন্দা সুস্মিতা সরকার নামের এক তরুণী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তরুণীর আত্মহত্যার দায়ে কাঠগড়ায় শুভজিৎ রায় ওরফে শুভেন্দু নামে তার গুণধর প্রেমিক। ধানতলা থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর থেকে ওই যুবক পলাতক। পুলিশ তাকে খুঁজছে।

শুভজিৎ নদিয়ার ঘোলা এলাকার বাসিন্দা। তবে উত্তরপ্রদেশে তার বোনের বাড়ি রয়েছে। মামার বাড়ি নেপাল সীমান্ত এলাকায়। অভিযুক্ত যুবক সেখানে পালিয়ে গিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রানাঘাট কলেজের বিএ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুস্মিতা। মাস ছয়েক আগে শুভজিতের সঙ্গে ফেসবুকেই আলাপ। সেখানেই প্রেম নিবেদন করে শুভজিৎ। প্রস্তাবে সম্মতি জানায় সুস্মিতা। এরপর তাদের দেখা হয়েছে অনেক। তবে ফেসবুক চ্যাটেই বেশি কথা হত। অভিযোগ, ভালোবাসার অভিনয় করে প্রায়ই শুভজিৎ মেয়েটিকে নিজের বিবস্ত্র ছবি তুলে পাঠাতে বলত। দিনের পর দিন নিজের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে প্রেমিককে পাঠাতো মেয়েটি। কিন্তু গণ্ডগোল বাধে কিছুদিনের মধ্যেই। ডিসেম্বরের শুরুতেই মেয়েটির কিছু বন্ধু জানায় ফেসবুকে তার কিছু আপত্তিকর ছবি আপলোড করা হয়েছে। বন্ধুদের মুখে এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায় সুস্মিতা। ফেসবুক ঘেঁটে আবিষ্কার করে তার নামে ফেক প্রোফাইল খোলা হয়েছে। যে ছবিগুলো শুভজিৎকে পাঠাতো, সেইসব গোপন মুহূর্তের ছবি আপলোড করে দেওয়া হয়েছে ওই প্রোফাইলে।

সুস্মিতার বাবা বিমল সরকার বলেন, আমাদের মেয়ে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছিল। বুঝতে পেরেছিলাম গুরুতর কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু ও লজ্জায় আমাদেরও বলতে পারছিল না।

রবিবার সকালে বাজারে গিয়েছিলেন বিমলবাবু। সে সময় প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়েছিলেন সুস্মিতার মা-ও। বাজার থেকে ফিরে বিমলবাবু দেখেন রান্নাঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ধারণা করেছিলেন কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। অনেক ডাকাডাকিতেও বন্ধ রান্নাঘর থেকে কেউ সাড়া দেয়নি। অবশেষে দরজা ভেঙে দেখা যায় রান্নাঘরের সিলিং থেকে ঝুলছে সুস্মিতার দেহ। তড়িঘড়ি করে তাকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় ধানতলা থানায় অভিযোগ করেছেন সুস্মিতার বাবা।

সুস্মিতার বাবা বলেন, মেয়ের মুখ থেকে আমি ওর এই নতুন সম্পর্কের কথা শুনেছিলাম। বারণ করেছিলাম এই ছেলেটির সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক রাখতে। কিন্তু আমাদের কথা শোনেনি। তার কথায়, আমার মেয়ের নোংরা ছবি ফেসবুকে দেওয়াতেই আজ এত বড় সর্বনাশ হল। এই ছেলেটিই আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ওর শাস্তি চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *