‘মানবতার দেয়াল’ সাড়া ফেলেছে চৌগাছা এলাকায়

এবিএস রনি, যশোর প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছায় একটি দেয়ালে লেখা- ‘আপনার অপ্রয়োজনীয় জিনিস রেখে যান, প্রয়োজনীয় জিনিস এখান থেকে নিয়া যান’। দেয়ালটিতে হ্যাংগারে কিছু কাপড় ঝুলানো। প্যান্ট-শার্ট-গেঞ্জি-চাদর ইত্যাদি। কেউ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় নিজের অতিরিক্ত দুয়েকটি কাপড় এখানে রেখে যান। আবার অন্য কেউ পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রয়োজন মনে হলে এখান থেকে একটি-দুটি কাপড় নিয়ে যান।

এমন ব্যতিক্রমধর্মী এক উদ্যোগ বেশ সাড়া ফেলেছে চৌগাছা উপজেলায়। উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম ফিরোজ এর উদ্যোক্তা।
কপোতাক্ষ নদীর হওয়ায় শীতের প্রকোপ চলে আসে আগে ভাগেই । ফলে শীতের প্রকোপে অসহায় হয়ে পড়েন দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত ছিন্নমূল মানুষজন।
সুবিধাবঞ্চিত ছিন্নমূল মানুষের সমস্যা কিছুটা লাঘব করতে গত ২৭ ডিসেম্বর এইচ এম ফিরোজ চৌগাছা উপজেলা পরিষদের সামনে একটি দেয়ালে গড়ে তুলেছেন যার নাম ‘মানবতার দেয়াল’।
দুদিনের মাঝেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে ‘মানবতার দেয়াল’। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে খুব দ্রুতই ভাইরাল হচ্ছে ‘মানবতার দেয়াল’। সেই সাথে তাঁর উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন এলাকার লোকজন। বাসার অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এখন স্থান পাচ্ছে ‘মানবতার দেয়ালে’।
উদ্দ্যোগটির নাম ‘মানবতার দেয়াল’ রাখার কারণ কেন জানতে চাইলে এইচ এম ফিরোজ জানান, আমি বাজার থেকে ব্যাগ তৈরির জন্য পুরান প্যান্ট কিনতে গিয়ে মানুষের ভীড় দেখি। এসময় মাথায় এলো পুরাতন কাপড়গুলো কিভাবে অন্যদের দেয়া যেতে পারে। ‘আমরা হেলায় বা আলসতার কারণে কাউকে দান করতে পারিনা। আবার কাকে দিব, দিতে গেলে সে নেয় কি না, কাপড়টা দিয়ে তাকে ছোট করা হবে কিনা এরকম বিভিন্ন প্রশ্ন আমাদের মনে আসে।’
কিন্তু যদি এটাকে এমন একটা জায়গায় রাখা যায় তাহলে সেখানে সবাই নিজের ইচ্ছা মত অপ্রয়োজনীয় জিনিস রেখে যাবে আবার প্রয়োজনীয় যে কোন জিনিস নিতেও পারবে। এখানে কাউকে কারো মুখোমুখি হতে হবে না। তাই এর নাম রেখেছি ‘মানবতার দেয়াল’।
তিনি আরো জানান, আমার ইচ্ছা এটাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া। আমাদের আশেপাশের গরীব অসহায় মানুষগুলো যেন কাপড়ের জন্যে বিশেষ করে শীতের কাপড়ের জন্যে কষ্ট না করে- এই জন্যেই এই উদ্যোগ। শুধু কাপড় নয়, অনেকে জুতোও রেখে যান এবং অন্য কেউ সেটা নিয়ে যান।
এইচ এম ফিরোজ বলেন, চৌগাছা সরকারি কলেজের শিক্ষক ফিরোজ কবীর,বিল্লাল হোসেন,তরিকুল ইসলাম ও স্থানীয় ফার্মেসী ব্যবসায়ী জামাল হোসেন,ছাত্রনেতা তাহমিদ শাকিল,রাজিব ঘোষ,রাসেল মল্লিক,শোভন হোসেন,রাকিব হাসান,সুমন হোসেন,শোভনসহ আরো অনেকের কাছ থেকে আমি এ বিষয়ে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এছাড়াও আমার বাবা-মা এই দুইজন ব্যক্তি আমাকে যথেষ্ঠ সাহস জুগিয়েছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *