নারীরা বেশি হাঁপানির সমস্যায় ভোগেন পুরুষদের তুলনায় : গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক : আমাদের ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী সরু সরু অজস্র নালি পথ রয়েছে। অ্যালার্জি, ধুলো বা অন্যান্য নানা কারণে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে ওঠে এবং অক্সিজেন বহনকারী নালি পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টসহ নানা সমস্যা শুরু হয়।

চিকিৎসকদের মতে, এই রোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত। তবে ইদানীং মাত্রাতিরিক্ত দূষণের ফলে অনেকের মধ্যেই বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় নারীই বেশি হাঁপানির সমস্যায় ভোগেন।
টেস্টোস্টেরন হরমোন শরীরের রোগ প্রতিরোধক কোষের কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণে বাধা দেয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, নারীদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন না থাকায় তারা অনেক সহজে অ্যাস্থেমায় আক্রান্ত হন। এর আগে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, শৈশবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অ্যাস্থেমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে। কিন্তু বয়ঃসন্ধির পর থেকে এই প্রবণতা বদলে যেতে থাকে।

সেল রিপোর্ট জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনায় দেখা গেছে, টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে সাইকোটিন প্রোটিন সৃষ্টিতে বাধা পায়। এই সাইটোকিনস প্রোটিন ফুসফুসে শ্লেষ্মা (মিউকাস) তৈরি করে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে। তাছাড়া সাইটোকিনস প্রোটিনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রদাহের ফলে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে ওঠে এবং অক্সিজেন বহনকারী নালী পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁপানি হল ডায়াবেটিস বা হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো একটি অসুখ, যা সম্পূর্ণ রূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে চললে আর সঠিক চিকিৎসায় এই রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই নারীদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *