‘কড়াকড়িতে কমেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি’

ন্যাশনাল ডেস্ক : টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করা, মুনাফায় উৎসে কর বৃদ্ধি এবং অপ্রদর্শিত অর্থ ক্রয় প্রতিরোধ করাসহ নানা রকম কড়াকড়ি আরোপের কারণে সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। ফলে প্রতি মাসেই কমছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩২০ কোটি টাকা। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৯২ শতাংশ কম। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে প্রায় ৭৩ শতাংশ। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া যায়।

জানা গেছে, বর্তমানে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্রের সব লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। দুর্নীতি কিংবা অপ্রদর্শিত আয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধ করতে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেইস সংরক্ষণের লক্ষ্য অভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র বড় বিনিয়োগে কঠোর হয়েছে সরকার। চাইলেই ভবিষ্য তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ নেই। এখন প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে কর কমিশনারের প্রত্যয়ন লাগে। পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক ফার্মের নামে সঞ্চয়পত্র কিনতে লাগছে উপকর কমিশনারের প্রত্যয়ন। এসব বিভিন্ন কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাচ্ছে বলে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নিয়ম-কানুন কড়াকড়ি করায় সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করায় অনেকে সঞ্চয়পত্র আগের মতো বিনিয়োগ করছে না। এ ছাড়া উৎসে কর বৃদ্ধির কারণেও মানুষ বিনিয়োগে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। সব মিলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *