অনলাইন ডেস্ক : ভয় একটি শারীরিক প্রক্রিয়া নাকি পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ আসলে ভয় পায় কেন? ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের মনোবিজ্ঞানী এবং ভীতি সংক্রান্ত এক বইয়ের লেখক ড. ওয়ারেন ম্যানসেল বলছেন, এটা অভিব্যক্তিমূলক, এটা জীববিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত এবং এর মূল ব্যাপার হচ্ছে টিকে থাকা। যেকোনো ধরণের ভীতি বা ঝুঁকির মুখে পালানো বা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের শরীরের একটা প্রস্তুতি থাকা দরকার।
সমাজবিজ্ঞানী ড. মারগী কের বলেছেন, ভয়ের কারণ দ্রুত শনাক্ত করা এবং পরিত্রাণের উপায় বের করা জরুরি। এটাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
বেশিরভাগ সময় মানুষ ভয় পেলে ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ অর্থাৎ ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে সেটা সামলাোর চেষ্টা করে অথবা সে পরিস্থিতির মুখে পালিয়ে যায় বা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়। এ সময় মানুষের হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়, যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।
তবে, অনেকেই ঐ পরিস্থিতি সাহসের সাথে মোকাবেলা করে। কেউ আবার ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে যান, লাফিয়ে ওঠেন।
এর কারণ মূলত যে ধরণের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে প্রস্তুতি নেবার মত যথেষ্ট সময় পায়নি আপনার মস্তিষ্ক, কিন্তু আচমকা এবং বিকট ভাবেই সে পরিস্থিতির সামনে পড়েছেন আপনি।
মনোবিজ্ঞানী ড. ম্যানসেল বলছেন, আপনি যদি খুব সহজেই চমকে যান, কিংবা বিশেষ কোন ভীতি বা ফোবিয়া থাকে আপনার, তাহলে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনি নিজে কিছু জিনিস চর্চা করতে পারেন, আবার প্রয়োজনে একজন থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন। এর প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের মনকে প্রস্তুত করা, মানে আপনি জানেন বিশেষ কোন পরিস্থিতি আপনাকে বিব্রত করে, সুতরাং এখনই তার মুখোমুখি না হয়ে, আপনার মন পুরোপুরি তৈরি হবার পরই আপনি তার মোকাবেলা করুন।
যেমন অনেকের উচ্চতা ভীতি রয়েছে, তাদের উচিত একটু একটু করে মনকে প্রস্তুত করা। এজন্য প্রয়োজনে এক্সপোজার থেরাপি, কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যায়ামও উপকার করে বলে তিনি মনে করেন।
কিন্তু সবকিছুর পরেও আচমকা মাকড়সা দেখলে, বা উঁচু কোন ভবনের ছাদে কোন ক্লাউন দেখে চমকে উঠবেন না এমন মানুষ কমই আছে।
কিন্তু তেমন ঘটনা সচরাচর ঘটেই বা কদিন? সুতরাং অত ভয় পেয়ে সারাক্ষণ সিটকে থাকার হয়ত কিছু নেই- নিজেকে বিষয়টি বোঝান।সূত্র: বিবিসি বাংলা