অনলাইন ডেস্ক :
রোজার সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মতোই পর্যাপ্ত গভীর ঘুমও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শারীরিক সুস্থতার জন্য দৈনিক ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুম দরকার।
তবে এজন্য কিছু নিয়ম মানতে হবে। ইসলাম এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানও বলছে, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে দ্রুত ঘুম ওঠা আবশ্যক।
আমাদের জীবনযাপন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে রমজান মাসে। বিশেষ করে সেহরি খেতে ভোর রাতে উঠতে হয় বলে রাতে একটানা ঘুমানো যায় না। ফলে অধিকাংশ মানুষই সেহরি খেয়ে আবার ঘুমিয়ে যান। কিন্তু সেহরির পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়া স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। কমপক্ষে আধাঘণ্টা পর ঘুমাতে যাওয়া উচিত।
আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে বায়োলজিক্যাল ক্লক নামে একটি প্রাকৃতিক ঘড়ি রয়েছে, যাকে দেহঘড়ি বলা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর নাম সার্কাডিয়ান রিদম। এই প্রক্রিয়াটি আমাদের ঘুমানো এবং ঘুম থেকে জেগে ওঠার পেছনে কাজ করে। এই প্রক্রিয়ার কারণে আমরা সাধারণত একটানা সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকি।
কিন্তু কোনো কারণে এই সময়ের মধ্যে জেগে উঠতে হলে ব্যাঘাত ঘটে সার্কাডিয়ান রিদমে। রমজান মাসে সেহরি খাওয়ার জন্য শেষরাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যেতেও নানা কারণে দেরি হয়। আবার সেহরির পর অফিস ও দিনের কাজের জন্যও বেশিক্ষণ ঘুমানো যায় না। ফলে রমজান মাসে একটানা বেশি সময় ঘুমানোর সুযোগ নেই। এ জন্য রাতে যত তাড়াতাড়ি ঘুমানো যায় তত ভালো, বিশেষ করে তারাবি নামাজ পড়ে যত দ্রুত ঘুমানো যাবে, তত বেশি ঘুমানোর সময় পাওয়া যাবে।
রাতের ঘুমের অভাব পূরণ করতে অধিকাংশ মানুষই সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে একদিকে যেমন ওজন বেড়ে যায়, অন্যদিকে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। কেননা খাবার খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লে আমাদের মেটাবলিজমের হার কমে যায়। এতে খাবার হজমে সমস্যা দেখা যায়, মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তাই সেহরির পর নামাজ পড়ুন, অভ্যাস থাকলে কুরআন তেলাওয়াত করুন। সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে না পড়ে কমপক্ষে আধাঘণ্টা পর বিছানায় যেতে পারেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেককেই দেখা যায় সেহরি খাওয়ার পর পরই ঘুমিয়ে পড়েন। সেহরির পর পরই ঘুমিয়ে যাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর, তাই এ কাজটি পরিহার করা উচিত।
আবার অপেক্ষা করার জন্য কেউ কেউ, যাদের হাঁটার অভ্যাস আছে তারা হাঁটতে যাবেন বলে চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু এটাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ভরা পেটে হাঁটলে শরীরের ওপর চাপ বাড়ে, এতে স্বাস্থ্যহানি হতে পারে।
এ জন্য রমজান মাসে রাত ১১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ুন। ৩টার সময় উঠে সেহরি খেয়ে ফজর নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করে এরপর ঘুমাতে যেতে পারেন। অথবা অফিস শেষ করে দুপুরের পর এসে ঘুমাতে পারেন। এ ঘুমটাও আপনাকে সতেজ ও স্বাভাবিক থাকতে সাহায্য করবে।