সঞ্চয়পত্রের কোন স্কিমে কত মুনাফার হার

অনলাইন ডেস্ক :

আগামী ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানো হয়েছে। আজ ১ জুলাই থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে।

গতকাল সোমবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। নতুন হার অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যুকৃত ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কীম’সমূহের ‘জুলাই-ডিসেম্বর’, ২০২৫ সময়কালের জন্য বিনিয়োগের শ্রেণিসীমার ভিত্তিতে দুই ধাপে (৭.৫০ লক্ষ টাকা ও এর নিম্নে এবং ৭.৫০ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে) পুনঃনির্ধারণ করা হলো। মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়নের ক্ষেত্রে বছরভিত্তিক হারে মুনাফা প্রাপ্য হবেন। আগের বিনিয়োগের পরিমাণসহ ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগ (এক বা একাধিক স্কিমে মোট বিনিয়োগের সমষ্টি) বিবেচনাপূর্বক উভয় ধাপে (৭.৫০ লক্ষ টাকা ও এর নিম্নে এবং ৭.৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে) বিনিয়োগসীমার ভিত্তিতে প্রযোজ্য হারে মুনাফা প্রাপ্য হবেন।

জাতীয় সঞ্চয় স্কিম’ এর আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব এ ৪টি স্কিমের মুনাফা হার অপরিবর্তিত থাকবে।

এ আদেশ ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ হইতে কার্যকর হবে। ১ জুলাইয়ের আগে ইস্যুকৃত সব ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম’ এর ক্ষেত্রে ইস্যুকালীন মেয়াদে, ইস্যুকালীন সময়ের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে। তবে, পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুনঃবিনিয়োগের তারিখের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে।

এ আদেশ জারি হওয়ার ৬ মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে।
এ আদেশ জারি হওয়ার ৬ মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে।

তবে বিনিয়োগকারী, ইস্যুকালীন সময়ে বিদ্যমান মুনাফার হার, বিনিয়োগকালের পূর্ণ মেয়াদের জন্য প্রাপ্য হবেন; অর্থাৎ যে মেয়াদের জন্য তা ইস্যু করা হয়েছিল, সেই মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত একই হারে মুনাফা প্রাপ্য হবেন।

সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার তুলনামূলকভাবে বেশি। বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার কম। এ ক্ষেত্রে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫০ লাখ টাকা। এ পরিমাণ বা এর কম হলে সুদহার বেশি হবে।

৭ দশমিক ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার কমে আসবে। 

দেশে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীন যত ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। এ সঞ্চয়পত্রে এত দিন সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ; এখন তা কমিয়ে করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে এ মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ, সেটা কমিয়ে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ করা হয়েছে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে, অর্থাৎ মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফা ছিল ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ; এখন তা করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারও কমানো হয়েছে। এ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এ ছাড়া তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলেও মুনাফা কমবে। এ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

এর বাইরে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাবেও মুনাফার হার কমিয়েছে সরকার। তিন বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ হার ছিল ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ; এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *