

ডিপি ডেস্ক :
দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় মর্যাদায় মহাসপ্তমী উদযাপিত হয়েছে। নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে মহাশক্তি আনন্দময়ীর পূজা শুরু হয়। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপচারে অর্থাৎ ষোলোটি উপাদানে দেবীর পূজা হয়। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্থানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে দেবীর পূজা করেন ভক্তরা।
সপ্তমীতে সকালে মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ভক্তরা প্রার্থনায় মগ্ন। পুরোহিতের সঙ্গে মন্ত্রে সুর মিলিয়ে করছেন দুর্গা মায়ের বন্দনা। কেউ কেউ এসেছেন শুধু দেবী দর্শনে। পূজা শেষে বিতরণ করা হয়েছে মহাপ্রসাদ। এ সময় দীর্ঘ লাইনে প্রসাদ নিতে দেখা গেছে ভক্তদের।
এ বছর ঢাকায় ২৫২টিসহ সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। গতকাল শুরু হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কার্যক্রম। আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত তা চলবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক জানান, দুর্গাপূজা উদযাপনকালে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো রকম বিঘ্ন ঘটলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে মোবাইল ফোনে (নম্বর-০১৭৬৬৮৪৩৮০৯) জানানো যাবে। এ ছাড়া সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের ১৪ তলায় ১৪২৪ নম্বর কক্ষেও সরাসরি তথ্য দেওয়া যাবে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র সহকারী সচিবকে এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পূজাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। তবে পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার কোনো তথ্য নেই। সবাই যদি সহযোগিতা করেন, বাংলাদেশের সব মানুষ ৩৬৫ দিনই নিরাপদে থাকবে।
গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেবসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পূজার দশমীর দিনের নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী রবিরার পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা থাকবে। এবারের পূজার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। সকাল ৮টায় সকল মন্দিরে নব পত্রিকা স্থাপন ও সপ্তমী বিহীত পূজা সম্পাদন হয়। সন্ধ্যায় শঙ্খ ধ্বনি, উলুর ধ্বনি ও ঢাকের তালে তালে আরতি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সকল মন্দিরে দর্শকদের সমাগম ঘটে।
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও রূপসা মহাশ্মশান ও শ্মশানকালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার নাথ এ প্রতিবেদককে বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। কোথায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। মন্দিরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা তৎপর রয়েছেন।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ইতিমধ্যেই মন্দির পরিদর্শন করেছেন। আগামীকাল শনিবার দশমী পূজা শেষে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় শ্রীশ্রীদুর্গা পূজা।















